মঙ্গলবার, ১৬ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা

সংশোধনী আসছে নীতিমালায়

গোলাম রাব্বানী

পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালায় সংশোধনী আনছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল বা এর কোনো অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের পর্যবেক্ষক হওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া নিবন্ধিত পর্যবেক্ষণ সংস্থার মেয়াদ শেষ হলেও ভোট পর্যবেক্ষণ করতে কোনো বাধা থাকবে না। পর্যবেক্ষকরা ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম দেখলেই তাত্ক্ষণিকভাবে তা ইসির কাছে রিপোর্ট করতে পারবে এবং নির্বাচন কমিশনও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। এ ধরনের নতুন ধারা যুক্ত করে একটি খসড়া পর্যবেক্ষণ নীতিমালা তৈরি করেছে ইসি সচিবালয়। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্রে এ খবর জানা গেছে। এই নীতিমালার বিষয়ে নাগরিকদের মতামত নিতে চলতি সপ্তাহের যে কোনো দিন তা ইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। নাগরিকদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে খসড়া নীতিমালায় সংযোজন-বিয়োজন আসতে পারে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, পর্যবেক্ষণ নীতিমালার খসড়ায় কমিশন অনুমোদন দিয়েছে। সংশোধিত খসড়াটি এক সপ্তাহের জন্য ইসির ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকবে।   রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ ও পর্যবেক্ষক সংস্থাসহ যে কেউ এ প্রস্তাবিত নীতিমালার বিষয়ে মতামত ইসির ওয়েবসাইটে বা লিখিতভাবে ইসির জনসংযোগ পরিচালকের কাছে পাঠাতে পারবেন। পর্যবেক্ষণ নীতিমালার ৪.৫ এর (ক) ধারায় ১০ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া থাকলেও তা সংশোধন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদনের জন্য সাত কর্মদিবসের বেশি সময় প্রয়োজন হয় বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। ৪.৬ ধারায় নিবন্ধনের মেয়াদের ক্ষেত্রে একটি শর্ত রাখা হচ্ছে—তা হলো-‘তবে শর্ত থাকে যে, নিবন্ধনের মেয়াদ শেষ হইয়া যাওয়ার পরও কোন কারণে নতুন করিয়া নিবন্ধন করা সম্ভব না হইলে কমিশন নিবন্ধিত সংস্থাসমূহের নিবন্ধনের মেয়াদ প্রয়োজন অনুযায়ী বৃদ্ধি করিতে পারিবে।’ এ বিষয়ে ব্যাখ্যা বলা হয়েছে—নিবন্ধনের মেয়াদ শেষ হলেও নির্ধারিত সময়ে কখনো কখনো নতুন করে নিবন্ধন সম্ভব হয় না। নিবন্ধন না থাকার কারণে কোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা হতে বিরত থাকতে না হয় সেজন্য এই ধারার প্রস্তাব করা হয়েছে। ভোটের তফসিল ঘোষণার পর পর্যবেক্ষণের আবেদন করার সময়সীমা ১০ দিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পর্যবেক্ষকের যোগ্যতায় বলা হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দল বা এর কোনো অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত কেহ নির্বাচন পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না।

 এ ছাড়াও বিধি অনুচ্ছেদে যুক্ত করা হয়েছে একটি নতুন বিষয়। বলা হয়েছে—‘নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত পর্যবেক্ষকগণ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সময় ভোটকেন্দ্র বা নির্বাচনী এলাকায় কোনো ধরনের অনিয়ম যা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য হুমকি হতে পারে, দেখতে পেলে সে বিষয়ে তাত্ক্ষণিক নির্বাচন কমিশনে রিপোর্ট প্রদান করিতে পারিবে।’

নবম সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আরপিও-১৯৭২ সংশোধন করে প্রথমবারের মতো নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সে সময় প্রথমবারের মতো পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। একই সঙ্গে পর্যবেক্ষক নীতিমালাও তৈরি করা হয়। এরপর ২০১০ সালে নীতিমালা সংশোধন করে পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়িয়ে পাঁচ বছর করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর