মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

বুড়িগঙ্গায় যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু

মাহবুব মমতাজী

বুড়িগঙ্গায় যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু

ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে হাসনাবাদ এলাকা থেকে হাসিব (২৫) নামে এক যুবকের লাশ ৩০ এপ্রিল উদ্ধার করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। পরিবারের অভিযোগ, হাসিবকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টির যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে পুলিশ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। পুলিশ বলছে,    পরিবারের লোকজন কষ্টে অনেক কথাই বলতে পারেন। এ ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। জানা গেছে, হাসিব পুরান ঢাকার নবাবপুরের মদনপাল লেনের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের ব্যালেন্স মোটরস নামে একটি পার্সের দোকানে কাজ করত। জাকির হোসেন নামে তার মালিকের একই জায়গার মিনি মার্কেটে আরও একটি দোকান আছে। হাসিবের বড় বোন নাসরিন আক্তার অভিযোগ করেন, যেদিন তার ভাইয়ের লাশ নদীতে পাওয়া যায় তার দুদিন আগে সে নিখোঁজ হয়। ২৮ এপ্রিল বিকালে রাজধানীর গোলাপবাগে তাদের ভাড়া বাসা থেকে হাসিবকে জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায় তার বন্ধু রাহুল। ওই ঘটনার এক সপ্তাহ আগে থেকে পাওনা ২০ হাজার টাকা, একটি এনড্রয়েট ফোন ও নদী নামের একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো নিয়ে হাসিবের সঙ্গে রাহুলের টানাপড়েন চলছিল। আমাদের সন্দেহ রাহুলের দিকেই। পরে মোবাইল ফোনে নদীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তার কাছে হাসিবের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কোনো কিছু বলতে রাজি হয়নি।

 পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নবাবপুর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের পাল মোটরসে রাহুলের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, হাসিবের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনি তাকে বাসা থেকে ডেকে আনেননি। এ ছাড়া হাসিবের মাথায় একটু সমস্যা ছিল। যে কারণে সে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। হয়তো মাথার সমস্যার কারণে নদীতে আত্মহত্যাও করতে পারে। তবে হাসিবের সঙ্গে লেনদেন নিয়ে তার কোনো সমস্যা ছিল না। ঘটনার অনুসন্ধানে নবাবপুরের ১২ নম্বর মদনপাল লেনের মডেল মিনি মার্কেটে হাসিবের মালিকের জাকির বিল্ডার্স দোকানে যাওয়া হয়। তবে দোকানটি বন্ধ পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেখানকার ব্যবসায়ীরা জানান, হাসিব খুবই শান্ত স্বভাবের ছেলে। শুনেছি তার মালিক জাকিরের সঙ্গে ব্যবসায় পার্টনার ছিল হাসিব। তাদের অভ্যন্তরীণ কোনো কোন্দলের কারণে হাসিব খুন হলেও হতে পারে। হাসিবের মৃত্যুর পর থেকে তার মালিকের দুটি দোকানই বন্ধ রয়েছে। এমনকি তার মালিক জাকিরকেও ঠিকমতো দেখা যায় না। এ ছাড়াও তার বন্ধু রাহুলও তার মাথার চুল ন্যাড়া এবং ফ্রেন্সকাট দাড়ি কেটে ক্লিন শেভ করে ফেলেছে। জানতে চাইলে জাকির হোসেন বলেন, হাসিব কখনই আমার ব্যবসার পার্টনার ছিল না। তার মৃত্যুর বিষয়ে কিছু জানি না। হাসিবের পরিবারের লোকজন ভালো বলতে পারবেন। আমি বিভিন্ন স্থানে মালামাল সরবরাহে ব্যস্ত থাকার কারণে দোকান বন্ধ রেখেছি। এ বিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পরই ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু করা যাবে না।

সর্বশেষ খবর