সোমবার, ১৯ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ থেকে সবাই সাবধান হোন দেশ বাঁচান : খালেদা

নিজস্ব প্রতিবেদক

শান্তিপূর্ণ ‘অবস্থান’ কর্মসূচি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়ে জনগণকে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল এক ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো নীতি  নেই, আদর্শ নেই। এরা শুধু লুটপাট করতে জানে। আমরা দেশের মানুষকে বলতে চাই, এই আওয়ামী লীগ থেকে সাবধান হোন। এ দেশকে বাঁচান। সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। প্রয়োজনে রাজপথে অবস্থান নিতে হবে নিজেদের। রাজপথে অবস্থান নেওয়ার সময় আসবে ঈদের পর।’ রাঙ্গুনিয়ায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরের ওপর ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এর সুষ্ঠু বিচারও দাবি করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলপূর্ব বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরী, মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দারসহ জোট নেতাদের নিয়ে ইফতার করেন খালেদা জিয়া। জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে  প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম এম আলম, আহসান হাবিব লিংকন, নবাব আলী আব্বাস খান, আনোয়ারা বেগম, মাওলানা রুহুল আমিন, জাফরুল্লাহ খান চৌধুরী, সেলিম মাস্টার, শফিউদ্দিন ভুঁইয়া, প্রয়াত নেতা কাজী জাফর আহমেদের বড় মেয়ে কাজী জয়া প্রমুখ ইফতারে অংশ নেন। এ ছাড়া বিএনপি ও ২০-দলীয় জোটের নেতারা ইফতারে যোগ দেন।

সরকারের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি জানতে চাই, মহাসচিবের ওপর এই হামলা হলো, তারপর কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে। আমাদের লোকজন কিছু না করলেও সঙ্গে সঙ্গে ধরে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়। আমি বলতে চাই, ওদের ধরতে হবে, তাদের শাস্তি দিতে হবে, জেলে পুরতে হবে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’ খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা খেতে পারি না। দেশের মানুষ খেতে পারবে না, শুধু ট্যাক্স দিতে হবে, ভ্যাট দিতে হবে, অমুক দিতে হবে, আওয়ামী লীগের মার খেতে হবে, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলখানায় বন্দী থাকতে হবে। না হলে এই গুম-খুনের শিকার হতে হবে। এগুলো মানুষ চায় না। জনগণকে বলব, এ থেকে নিজেরা বাঁচতে চান, নিজেদের পরিবারের স্বজনদের বাঁচাতে চান এবং দেশটাকে বাঁচাতে চান? তাহলে আসুন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সব দলকে এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে সবাই মিলে যেটা আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি হবে সেই কর্মসূচি দিয়ে এদের ক্ষমতা থেকে বিদায় করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করব।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশে নির্বাচন হবে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে নয়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে থেকে এ দেশে নির্বাচন হবে। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, ২০-দলীয় জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আমি দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বলতে চাই, হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন দিলে সেই নির্বাচনে কেউ অংশগ্রহণ করবে না। সেই নির্বাচন দেশে হতে দেওয়া হবে না।’

২০০৭ সালে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২২ জানুয়ারি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ১১ দিনের মাথায় আওয়ামী লীগ নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ওই সময় নির্বাচনে এসেও যখন দেখল তাদের অবস্থা ভালো নয়, তখন তারা সেই নির্বাচন থেকে সরে গেল, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করল। পরে ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দিনের সঙ্গে যোগসাজশে সেখানে এই নির্বাচন বানচাল করে একটি অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করে সামরিক শাসন জারির ব্যবস্থা করল।’

সর্বশেষ খবর