শুক্রবার, ৩০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

উপ-উপাচার্য পাবে সব বিশ্ববিদ্যালয়

আকতারুজ্জামান

দেশে ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই নেই উপ-উপাচার্যের পদ। উপাচার্যের পদ হঠাৎ শূন্য হলে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আকস্মিক স্থবির হয়ে যায় প্রশাসনিক কার্যক্রম। প্রভাব পড়ে একাডেমিক কার্যক্রমেও। তাই এবার উপ-উপাচার্য না থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য নিয়োগ দিতে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে ৮ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য নেই বা স্বল্পসময়ে শূন্য হবে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত উপ-উপাচার্য নিয়োগের কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (বিশ্ববিদ্যালয়) ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে উপ-উপাচার্যের পদ নেই। আবার পরিধি অনুযায়ী কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক উপ-উপাচার্যের পদ রাখা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, শূন্যপদে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কিন্তু অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে উপ-উপাচার্যের পদ নেই। আইন সংশোধন করে উপ-উপাচার্যের পদ সৃষ্টি করে সেখানে নিয়োগ দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানায়, বিভিন্ন বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় ও তুলনামূলক নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্যের পদ রাখা হয়নি। কতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্যের পদ রয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক খন্দকার হামিদুর রহমান কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।’ ইউজিসির একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্যের পদ নেই। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের নিয়োগ প্রক্রিয়া অনেক ক্ষেত্রেই বিলম্বিত হয়। অনেক সময় দেড় থেকে দুই মাসও লেগে যায়। উপ-উপাচার্যের পদ থাকলে উপাচার্যের পদ কিছু দিন শূন্য থাকলেও একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম গতিশীল থাকতে পারে। উপ-উপাচার্য না থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত এই প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি জানান তারা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদ। এ ছাড়া উপাচার্য বিভিন্ন দাফতরিক কাজে ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করলে উপ-উপাচার্যের প্রয়োজন দেখা দেয়। কিন্তু অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে উপ-উপাচার্যের পদই নেই। উপ-উপাচার্য থাকলে তিনি উপাচার্যের জন্য বিভিন্ন প্রশাসনিক কার্যক্রমে সহায়ক হন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউজিসির একটি সূত্র জানায়, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য নিয়োগ পেয়ে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের মধ্যে মতবিরোধ, মনোমালিন্য দেখা দেয়। এর প্রভাব পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে। এতে শিক্ষকদের গ্রুপিং, দলাদলি বৃদ্ধি পায়।

সর্বশেষ খবর