শনিবার, ৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
উন্নয়নে অমিত সম্ভাবনাময় মেহেরপুর

গতির সঙ্গে তাল মেলাতে ব্যর্থ

এম এ এস ইমন

মেহেরপুর প্রতিনিধি

গতির সঙ্গে তাল মেলাতে ব্যর্থ

৭১৬ বর্গকিলো মিটারের মেহেরপুর বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট জেলা। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এ জেলাটি বাংলাদেশের অন্যতম অবহেলিত একটি জনপদ। এখানে নেই কোনো শিল্পকারখানা, তেমন বড় কোনো স্থাপনা। সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো উদ্যোগেই গড়ে ওঠেনি কলকারখানা; যার ফলে উন্নয়নের যে গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে তাতে তাল মেলাতে পারছে না মেহেরপুর। এ কথাগুলো বললেন মেহেরপুর জেলা স্থলবন্দর বাস্তবায়ন আন্দোলনের মুখপাত্র ও রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস পরিচালনা  পরিষদের পরিচালক এম এ এস ইমন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মেহেরপুরবাসী এ জেলায় একটি স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ভারত সীমান্তবর্তী এ জেলায় স্থলবন্দর হলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ এবং পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হবে। মেহেরপুর থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৭৫ কিলোমিটার। ৪০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের আরও দুই জেলা বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদ। ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে নদীয়া। সীমান্তের ১০০ গজ দূরেই ভারতের মহাসড়ক। এখানে উভয় দেশের সীমান্তের অবস্থান ও যোগাযোগ ভালো থাকায় স্থলবন্দর স্থাপনে সরকারকে অবকাঠামো উন্নয়নে খুব বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে না। ১৯৯৬ সালের এপ্রিলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে মেহেরপুরে স্থলবন্দর স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। রাজস্ব বোর্ড তাদের রিপোর্টে এ স্থলবন্দরের গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে জানায়, এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী আনা-নেওয়া সহজ ও দ্রুত হবে। রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রজ্ঞাপন আকারে ওই বছরের ২৮ জুলাই গেজেট প্রকাশ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসে ‘মুজিবনগর স্থলবন্দর’ নামে মেহেরপুরে একটি চেকপোস্ট স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারও কোনো বাস্তবায়ন নেই। এ বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, নতুন স্থলবন্দর হলে প্রথমেই মেহেরপুরে হবে। এ ব্যাপারে সবকিছুই এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। তবে এর আগে সেখানে শুল্কবন্দর স্থাপনের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এত কিছুর পরও দীর্ঘ ২১ বছর ধরে দফায় দফায় চিঠি চালাচালি, জরিপ ও আশ্বাস দেওয়া ছাড়া আর কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ মেহেরপুরবাসী।

সাম্প্রতিক সময়ে মেহেরপুরে রেলসংযোগ চালু করার লক্ষ্যে প্রস্তাব পাস হয়েছে। কিন্তু এরও কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। মেহেরপুর একটি কৃষিপ্রধান এলাকা কিন্তু কৃষিবান্ধব উন্নয়ন এখানে হয়নি। এখানে কোনো কোল্ড স্টোরেজ নেই, ফলে কৃষিজাত পণ্য সংরক্ষণ করার জন্য অন্য জেলার ওপর নির্ভরশীল হতে হয়।

সর্বশেষ খবর