বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে শিগগিরই সতর্কতা নির্দেশ

প্রতারণার হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষায় ইউজিসির উদ্যোগ

আকতারুজ্জামান

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে শিগগিরই শিক্ষার্থীদের সতর্ক করতে এবং বিতর্কিত ও অননুমোদিত প্রোগ্রামে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি না হতে নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।  প্রতারণার হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষায় ইউজিসি এ উদ্যোগ নিয়েছে।

ইউজিসি সূত্র জানায়, এইচএসসি বা সমমানের ফল প্রকাশের পরপরই অনেক বিশ্ববিদ্যালয় নানা মুখরোচক বিজ্ঞাপন দিয়ে শিক্ষার্থী টানতে চেষ্টা করে। রঙ-বেরঙের চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে প্রলুব্ধ হয়ে অনেক অননুমোদিত প্রোগ্রামে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হয়ে বিপাকে পড়েন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন না থাকা এসব অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট বা প্রোগ্রাম থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের সনদের দায় গ্রহণ করবে না। গণবিজ্ঞপ্তিতে অননুমোদিত ক্যাম্পাস, প্রোগ্রামে ভর্তি না হওয়ার নির্দেশনা থাকবে। ইউজিসির ওয়েবসাইট (.িঁমপ.মড়া.নফ) দেখে জেনেশুনেই ভর্তি হওয়ার কথাও  উল্লেখ থাকবে এতে। এ জন্য ওয়েবসাইটের নোটিস বোর্ডে নিয়মিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে তথ্য আপলোড করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহীর সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটির (আরএসটিইউ) পরিচালিত প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য ন্যূনতম ল্যাবরেটরি ফ্যাসিলিটিজ নেই। এ ছাড়া সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে সাতটি প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য ইউজিসির কোনো অনুমোদনই নেই। ইউজিসির এক বিজ্ঞপ্তিতে সম্প্রতি আরএসটিইউতে অননুমোদিত প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের ভর্তি না হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে ইউজিসি জানায়, গণবিশ্ববিদ্যালয়ে সাতটি অননুমোদিত প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির আয়োজন করেছে। অননুমোদিত প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর পরিপন্থী। ওই সাতটি প্রোগ্রামেও শিক্ষার্থীদের ভর্তি না হতে নির্দেশনা দেওয়া হয় ইউজিসির পক্ষ থেকে। কিন্তু ইউজিসির এমন নির্দেশনা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়টি তা অনুসরণ করছে না। জানা গেছে, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের এ সাতটি প্রোগ্রাম বর্তমানে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। ছাত্রছাত্রী ভর্তির ক্ষেত্রে নির্দেশনা সম্পর্কে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করতে লাখ লাখ টাকার প্রয়োজন হয়। এত টাকা খরচ করে কোনো শিক্ষার্থী যাতে অনুমোদন না থাকা বা অবৈধ কোনো প্রোগ্রামে ভর্তি না হয়— এ জন্যই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। আমরা চাই কোনো ছাত্র বা ছাত্রী যাতে বিপত্তির শিকার না হন। এ জন্য আমরা শিক্ষার্থীদের বার বার সতর্ক করি, যাতে তারা প্রতারিত না হন। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে বছরের পর বছর ক্যাম্পাস পরিচালনা করে। শিক্ষার্থীরা না বুঝে সেসব প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে বিপাকে পড়েন। দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এমনটি দেখেছি আমরা। আবদুল মান্নান বলেন, ‘২০০৬ সাল থেকে তারা আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে ক্যাম্পাস পরিচালনা করে আসছিল। সেই স্থগিতাদেশের নিষ্পত্তি হয়েছিল ২০১৬ সালে। এই ১০ বছরে যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে, সনদ নিয়েছে, সেগুলো অবৈধ’।

সর্বশেষ খবর