শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

অরক্ষিত বেনাপোল স্থলবন্দর

বকুল মাহবুব, বেনাপোল

অরক্ষিত বেনাপোল স্থলবন্দর

অরক্ষিত বেনাপোল বন্দর, দেখার কেউ নেউ। বেনাপোল বন্দর অভ্যন্তরে ভারতীয় ট্রাকচালকরা স্টোভ ও গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে ট্রাকের নিচে কিংবা ভিতরে রীতিমতো রান্না করে খাচ্ছেন। এ রকম খামখেয়ালিপনায় ইতিমধ্যে বন্দরে কয়েক দফা আগুন লেগে পুড়ে গেছে কোটি কোটি টাকার আমদানি করা পণ্য। তদন্ত কমিটি বন্দরে আগুন লেগে পোড়ার পেছনে ভারতীয় ট্রাক চালকদের রান্না করাকে দায়ী করলেও থেমে নেই তাদের রান্নার কার্যক্রম। বন্দর অভ্যন্তরে কে শ্রমিক, কে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, কে বহিরাগত চেনার কোনো উপায় নেই। কাগজে-কলমে সিকিউরিটি গার্ড ও আনসার সদস্য বন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকলেও তাদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো নয়। যে যার মতো চলছে বন্দরের ভিতর দিয়ে। এ অরক্ষিত অবস্থায় ভারতীয় ট্রাকচালক ও হেলপারদের অবাধ বিচরণ চোখে পড়ার মতো। অধিকাংশ ভারতীয় ট্রাকচালক অবাঙালি হওয়ায় এরা এ দেশের হোটেলগুলোতে খাওয়া-দাওয়া করেন না। তারা নিজেদের খাবার নিজেরা রান্না করে থাকেন। বন্দরে রান্না করার কোনো নির্দিষ্ট স্থান নেই। সে কারণে রান্নার জন্য তারা তাদের ট্রাকের নিচের বা সামনের-পেছনের ফাঁকা স্থানকে নিরাপদ মনে করেন। তাদের এ ভুলের কারণে বাংলাদেশকে ইতিমধ্যে বিরাট রকমের খেসারত দিতে হয়েছে। আবারও যে কোনো মুহূর্তে দাউ দাউ করে আগুনে পুড়ে যেতে পারে     হাজার হাজার কোটি টাকার আমদানি করা পণ্যসহ বন্দরের অবকাঠামো। আগুন নিয়ে ভারতীয় ট্রাক   ড্রাইভারদের নিত্যনতুন খেলা চললেও এ ব্যাপারে চরম উদাসীন কাস্টমস, বন্দর, পুলিশ প্রশাসনসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন বেনাপোল স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায় ভারতীয় ট্রাকচালক ও হেলপাররা রান্না করার স্টোব ও ছোট ছোট গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে রান্না ঘরের কাজ ট্রাকের নিচে সেরে নিচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল চেকপোস্টসহ বন্দর এলাকার আশপাশে এ ধরনের রান্নার আনুষঙ্গিক কাজ চললেও বন্দর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা জানায়, এভাবে ট্রাকের নিচে রান্না কাজ চললে গ্যাস সিলিন্ডার এবং স্টোবের আগুন যদি ট্রাকের ইঞ্জিন অথবা ডিজেল ট্যাংকে লেগে যায় সে ক্ষেত্রে আমদানিকৃত হাজার হাজার কোটি টাকার পণ্য ভস্মীভূত হয়ে যেতে পারে মুহূর্তে। যাতে সরকার হারাবে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব, আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হবে নিঃস্ব। ১৯৯৬ সালে এ রকম ঘটনায় বন্দরে ভয়াবহ আগুনে হাজার কোটি টাকার বেশি আমদানি করা পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছি। বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপূর্ব হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমরা অভিযোগ পেলে দ্রুত তাদের সঙ্গে কথা বলে ট্রাকের নিচে রান্না না করার জন্য অনুরোধ করি। যদিও তারা অন্য রাষ্ট্রের নাগরিক।

সর্বশেষ খবর