বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

১৯৮ কোটি টাকা লোপাটে পরোয়ানা ১৬ ব্যবসায়ীকে

নারায়ণগঞ্জ সোনালী ব্যাংক

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের প্রায় ১৯৮ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ১৬ জন গার্মেন্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সোমবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। ১৬ জনের মধ্যে আছেন আবদুর রাশেদ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা খেলাঘরের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম। মামলায় অভিযুক্ত সোনালী ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা আদালতে আত্মসমর্পণের পর আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ছাড়া চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

আদালত সূত্র জানায়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আঁতাত করে প্রায় ১৯৮ কোটি টাকা লোপাটসহ দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০১০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা করেন সোনালী ব্যাংকের করপোরেট শাখার তত্কালীন এজিএম সফিজ উদ্দিন আহমেদ। মামলায় আসামি করা হয় সোনালী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ করপোরেট শাখার সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার মো. নুরুজ্জামান, সাবেক সিনিয়র অফিসার বাহার আলী হাওলাদার এবং সাবেক অফিসার বিমল কৃষ্ণ দাস ও সিনিয়র অফিসার কবির আহমেদকে। আদালত মামলাটি নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিলে পরবর্তীতে মামলাটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ন্যস্ত করা হয়। দুদকের উপ-পরিচালক মো. বেনজীর আহমেদ তদন্ত শেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট-৩৩৫) দাখিল করেন। ২৭ পাতার অভিযোগপত্রে বলা হয়, মামলা তদন্তে সোনালী ব্যাংকের মোট ১৯৭ কোটি ৮০ লাখ ৭২ হাজার ৬২১ টাকার  আর্থিক ক্ষতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। চার্জশিটে এজাহারভুক্ত চার আসামির মধ্যে তিন আসামির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি খাতে দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ উল্লেখ করা হয়। কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় এজাহারভুক্ত আসামি ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র অফিসার কবির আহমেদকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে দুদক। সোনালী ব্যাংকের পক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মাসুদ উর রউফ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া এলসির মাধ্যমে এ টাকা লোপাট করেছেন। এদিকে চার্জশিটে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীরা হলেন— আইএন নিটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী নজরুল ইসলাম, ইউনিট নিটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা অংশীদার মো. মজিবুর রহমান সোহেল, ড্রিম অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইলিয়াস সরকার,  ড্রিম অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান কাজী হারুন অর রশিদ, ওবায়েদ নিটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদুর রহমান ও চেয়ারম্যান আবদুর রাশেদ, কেপিএফ টেক্সটাইলের প্রোপাইটর মো. আতাউর রহমান, লিজেন্ড ফাইভ এ্যাটায়ার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম ও পরিচালক রবীন্দ্রনাথ ধর, মেসার্স লিজেন্ড ফাইভ এ্যাটায়ার্স লিমিটেডের পরিচালক বিশ্বাস খালেদ হোসাইন, লিজেন্ড ফাইভ এ্যাটায়ার্স লিমিটেডের পরিচালক তাপস কুমার সাহা, মেসার্স লিজেন্ড ফাইভ এ্যাটায়ার্স লিমিটেডের পরিচালক মোঃ হোসাইন, কেএমএস ডিজাইনওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান ও চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম, দি এশিয়ান টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান এবং মার্স ফ্যাশনসের  স্বত্বাধিকারী মো. আরমান হোসেন।

অভিযুক্ত খেলাঘরের সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নিজেকে লিজেন্ড ফাইভ এ্যাটায়ার্স লিমিটেডের পরিচালক বলে দাবি করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই এবং এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।

সর্বশেষ খবর