রবিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

শিক্ষক নিয়োগে অন্তহীন অভিযোগ

শরিফুল ইসলাম সীমান্ত

শিক্ষক নিয়োগে অন্তহীন অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর আরও কিছু অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছেন অনিয়মের শিকার প্রার্থী এবং অভিভাবকরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব নাম না প্রকাশ করার শর্তে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার মেয়েকে ভাইভা বোর্ডের দায়িত্বরত এক্সটার্নাল সুপারিশ করে। কিন্তু বিভাগটির শিক্ষকরা কাকে নিয়োগ দেবে তা পূর্বেই নির্ধারিত করে রেখেছিল। ফলে তারা আমার মেয়েকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়নি এই অভিযোগ তুলে বাদ দিয়ে দেয়। অথচ আমি যে সব কিছু জমা দিয়েছি তার প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। তাছাড়া আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ জানালে তারা এর কোনো সদুত্তর দেয়নি।’ প্রসঙ্গত, কিছুদিন পূর্বে বিভাগটিতে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বিভাগটির ৪০তম ব্যাচের শুধু নন-থিসিস গ্রুপের শিক্ষার্থীরা আবেদন করার সুযোগ পান। অথচ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী হয়েও আবেদন করার যোগ্যতা হারান থিসিস গ্রুপের শিক্ষার্থীরা। কারণ এখনো পর্যন্ত থিসিস গ্রুপের মাস্টার্সের রেজাল্টই প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি নন-থিসিস গ্রুপের রেজাল্ট প্রকাশের পর চার মাস অতিবাহিত হলেও এখনো থিসিস গ্রুপের রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে পছন্দসই প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে এবং থিসিস গ্রুপের অপেক্ষাকৃত যোগ্য শিক্ষার্থীদের বাদ দিতেই রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়নি। এর আগেও নিজেদের পছন্দ করা প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট নিজেদের মতো করে সাজানোর অভিযোগ রয়েছে বিভাগটির বিরুদ্ধে। ৩৯তম ব্যাচের অনার্সের রেজাল্ট বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪৩ জনের অধিক ৩.৫০ এর ওপরে অর্জন করে। কিন্তু দুজন ব্যতীত মাস্টার্সে বাকি সবার রেজাল্ট ৩.৫০-এর নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ওই ব্যাচের ওই দুজন ব্যতীত বাকি সবাই আবেদন করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে।

 পরে ওই দুজনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

জানা যায়, অনার্স রেজাল্টের ওপর ভিত্তি করে ওই ব্যাচটির অনেকেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে আবেদন করে এবং খণ্ডকালীন হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়। পরে শুধুু মাস্টার্সের এই রেজাল্টের কারণে তারা চাকরিচ্যুত হন।

এসব বিষয়ে জানতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি ড. মো. খালিদ কুদ্দুসকে মুঠোফোনে কল করা এবং খুদেবার্তা পাঠানো হলে তিনি কোনোটিরই জবাব দেননি। উপরন্তু তার একজন অনুগত ছাত্রকে এই প্রতিবেদকের কাছে পাঠান এবং নিউজ না করার অনুরোধ জানান।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি ইমরান নাদিম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোতে শিক্ষকদের পূর্ব পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার সংস্কৃতি রয়েছে। এতে করে মানসম্মত শিক্ষক না পেয়ে সর্বোপরি শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম।’

সর্বশেষ খবর