চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৪ নং রাজস্ব সার্কেল প্রথম দিনের শুনানির জন্য ১০৪ জন ভবন মালিকের ১ কোটি ৫৮ লাখ ৩৯ হাজার ৮০০ টাকার প্রস্তাবিত মূল্য চূড়ান্ত করে ৪৮ লাখ ১৪ হাজার টাকা। এসব ভবন মালিকের কাছে অ্যাসেসমেন্টে ২৬ লাখ ৯২ হাজার ৮০০ টাকার পৌরকর প্রস্তাব করা হয়। শুনানি শেষে তা চূড়ান্ত করা হয় ৮ লাখ ১৮ হাজার ৩৮০ টাকা। আপিল বোর্ড প্রথম দিন ৭০ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দিন ৬৬ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবুও করদাতারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
করদাতাদের অভিযোগ, চসিক নতুন অ্যাসেসমেন্টে ১০ গুণ কর বেড়েছে। এখন রিভিউ বোর্ড ৫ গুণ কমাচ্ছে। ৫ গুণ কমানোর পরও আরও ৫ গুণ বেশি গৃহকর দিতে হবে। পাঁচ বছর আগের অ্যাসেসমেন্টের ভিত্তিতে পরিশোধ করা করের তুলনায় বেড়ে যাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। আবার রিভিউ বোর্ডে আশানুরূপ কর কমাতে পারায় অনেকে সন্তোষও প্রকাশ করেন। ৪ নং সার্কেলের করদাতা হাফেজ বলেন, আমার ভবনের অ্যাসেসমেন্টে ভেল্যুয়েশন করা হয়েছিল ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আপিলে তা কমিয়ে আনা হয়েছে ২০ হাজার টাকা। কিন্তু ৫ বছর আগের ভেল্যু ছিল ৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের চেয়ে এখন আমাকে চারগুণ বেশি কর দিতে হবে। তাই আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি।’
চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অসন্তোষ হওয়ার কোনো কারণ নেই। আপিল বোর্ডে সবার কথা আন্তরিকতার সঙ্গে শোনা হচ্ছে। তাদের কর আদায়ের আইনগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়গুলো জানানো হচ্ছে। তার পরও কেউ কেউ হয়তো অসন্তোষ হতে পারেন। আগামীতে তারাও বিষয়টি বুঝবেন।’ তবে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ নুরুল আবসার বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল ভাড়ার ভিত্তিতে নয়, অ্যাসেসমেন্ট করতে হবে আয়তনের ভিত্তিতে। তাই আমরা এখনো আমাদের এই দাবিটি জানিয়ে আসছি।’চসিকের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল ৫ নং সার্কেলের অধীনে ১২৫ জন করদাতাকে চিঠি দেয় রিভিউ বোর্ড। এর মধ্যে ৯৯ জন আপিল নিষ্পত্তি করেছেন। আপিল বোর্ডে অংশগ্রহণকারী করদাতাদের অ্যাসেসমেন্ট ভেল্যু ছিল ৬৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। শুনানিতে করদাতাদের মতামতের ভিত্তিতে আপিল বোর্ড নিষ্পত্তিক্রমে ভেল্যু নির্ধারণ করে ২১ লাখ ৯০ হাজার ৯০০ টাকা। অ্যাসেসমেন্ট ভেল্যু থেকে ছাড় দেওয়া হয় ৪২ লাখ ৬৯ হাজার ১০০ টাকা। দ্বিতীয় দিনে ৬৬ দশমিক ৯ শতাংশ পর্যন্ত ভেল্যু ছাড় দেওয়া হয়। তাছাড়া রিভিউ বোর্ড গরিব বিবেচনায় চারজনের গৃহকর সম্পূর্ণ মওকুফ করে দেয়।