রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

পুলিশ কর্মকর্তা স্বামীকে গ্রেফতারের দাবি স্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমানকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তার স্ত্রী মোসাম্মৎ আমেনা। জাহিদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে পুলিশ সদর দফতর, তার বর্তমান কর্মস্থল এপিবিএন-এ অভিযোগ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে মামলা করেছেন আমেনা। ওই মামলায় এসআই জাহিদের বিরুদ্ধে দুটি গ্রেফতারি ওয়ারেন্ট জারি করেছে আদালত। কিন্তু এত কিছুর পরও জাহিদ গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আমেনা। জানা গেছে, এসআই জাহিদের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার বেথুড়িয়ায়। মোসাম্মৎ আমেনা জানান, এসআই জাহিদ আগে বিয়ে করলেও সেই তথ্য গোপন করে ২০১৪ সালের ১৪ জুন তাকে বিয়ে করেন। কিছু দিন না যেতেই জাহিদ যৌতুকের জন্য তাকে মারধর করেন। সংসার টিকিয়ে রাখতে তিনি মা-বাবার কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে জাহিদকে এনে দেন।

 এর কিছু দিন পর আবারও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন জাহিদ। যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করায় জাহিদ তাকে ফের মারধর শুরু করেন। ওই দম্পতির জেবা মাছুমা (১ বছর ৬ মাস) ও জেরিন রাফা (৪ মাস) নামে দুই মেয়ে আছে।

২ জুন আমেনার ব্যবহৃত পাঁচ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রেখে তাকে বাসা থেকে বের করে দেন জাহিদ। তখন তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২৪ জুন আমেনার দ্বিতীয় মেয়ের জন্ম হয়। ৪ জুলাই তিনি নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে জাহিদ ও তার প্রথম স্ত্রী নাছিমার বিরুদ্ধে যৌতুক আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় ৫ জুলাই এবং ৯ অক্টোবর এসআই জাহিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি ওয়ারেন্ট জারি করে আদালত। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

আমেনা আরও জানান, তিনি জাহিদের সঙ্গে সংসার করতে চান। কিন্তু জাহিদ তাদের ভরণ-পোষণের টাকা দিচ্ছেন না। এ অবস্থায় দুই শিশুসন্তান নিয়ে তিনি মানবেতর জীপনযাপন করছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সবুজবাগ থানার এক কর্মকর্তা জানান, সবুজবাগ থানায় থাকাকালে এসআই জাহিদের বিরুদ্ধে অপরাধ তত্পরতায় যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে। এর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

আমেনার অভিযোগ, ‘সম্প্রতি আমি পুলিশ সদর দফতরে গিয়েছিলাম। সেখানে ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা এপিবিএন-১ এর অধিনায়ককে ফোন দিয়ে এসআই জাহিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন। পরে এপিবিএন-১ এর অধিনায়কের কাছে গেলে তিনি বলেন, এসআই জাহিদ শয়তান লোক, ওর সঙ্গে কি আপনি (আমেনা) পেরে উঠবেন। তাকে যদি সাসপেন্ড করি তবে সে আপনার মুখে অ্যাসিড মারতে পারে, বাচ্চাদের মেরে ফেলতে পারে। আপনি সাবধানে থাকবেন।’ পুলিশ কর্মকর্তার মুখে এমন কথা শুনে আমি রীতিমতো হতবাক এবং আতঙ্কিত।

এ বিষয়ে এপিবিএন-১ এর অধিনায়ক খন্দকার ফরিদুল ইসলাম জানান, এসআই জাহিদের বিরুদ্ধে আমেনার অভিযোগগুলো তদন্তে একজন এডিশনাল এসপিকে দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর