রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বগুড়ায় নবান্নের মাছের মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

এখন আর আগের মতো বড় মাছ খুব একটা দেখা মেলে না। কালেভদ্রে মেলা-পার্বণ ছাড়া বড় মাছ দেখতে পাওয়াটা এখন বিস্ময়। প্রতিবছর বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার উথলীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নবান্ন উৎসব উপলক্ষে মেলা বসে। প্রায় দেড়শ বছর ধরে এ মেলা হয়ে আসছে। স্থানীয়রা বলছেন, নদী ও পুকুরে চাষ করা বড় মাছ কেনার প্রতিযোগিতা লেগে থাকে এ মেলায়। গতকাল এ মেলায় এক কেজি থেকে শুরু করে ২০ কেজি ওজনের রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, ব্রিগেডসহ হরেক রকমের মাছ বিক্রি হয়। বিশালাকৃতির রুই-কাতলা ও চিতল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

 মাঝারি আকারের মাছ ৩০০ টাকা থেকে সাড়ে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ২০০-৩৫০ টাকা দরে ব্রিগেড ও সিলভার কার্প বেচাকেনা হয়। এ মেলা গতকাল আশপাশের ২০ গ্রামের স্বজনদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

মেলাকে কেন্দ্র করে উথলী, রথবাড়ি, ছোট ও বড় নারায়ণপুর, ধোন্দাকোলা, সাদুল্লাপুর, বেড়াবালা, আকনপাড়া, গরিবপুর, দেবিপুর, গুজিয়া, মেদনীপাড়া, বাকশন, গনেশপুর, রহবলসহ প্রায় ২০ গ্রামের প্রতিটি ঘরেই ছিল উৎসবের আয়োজন। প্রতিটি বাড়িতেই মেয়ে-জামাইসহ আত্মীয়স্বজনদের আগে থেকেই নিমন্ত্রণ করা হয়। পরিবারের সবাইকে নিয়ে তারা নতুন ধানে নবান্ন উৎসব করেন।

বগুড়ার সোনাতলা থেকে লোহাগাড়া নদী এলাকার মাছ ব্যবসায়ী অখিল চন্দ্র সরকার জানান, প্রতি বছরই তারা মেলায় মাছ বিক্রি করতে আসেন। গত বছরের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি, বেচাকেনাও আশানুরূপ হয়নি। জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার পুনট গ্রামের মোসলেম উদ্দিন মিয়া জানান, মেলায় ছোট-বড় মিলে ২০০ মাছের দোকান বসেছে। প্রত্যেকে অন্তত ৬ থেকে ১০ মণ করে মাছ বিক্রি করেছেন। মেলায় মাছ সরবরাহের জন্য ২০টি আড়ত খোলা হয়। সেসব আড়ত থেকে স্থানীয় বিক্রেতারা পাইকারি দরে মাছ কিনে মেলায় খুচরা বিক্রি করেন।

মেলায় ২০ কেজি ওজনের একটি বিগ্রেড মাছের দাম চাওয়া হয় সাড়ে ৬০০ টাকা হিসেবে ১৩ হাজার টাকা। পরে মোকামতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোকলেছার রহমান সেই মাছটি কিনে নেন ১২ হাজার টাকায়। মাছের মেলার খবর পেয়ে জেলা শহর থেকেও অনেকে এখানে ছুটে আসেন মাছ কিনতে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর