বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ২০১৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের শেষ তিন মাসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে যে কোনো দিন নির্বাচন হবে। তার আগে আপনার (মওদুদ) শক্তি থাকলে ক্ষমতা থেকে নামানোর চেষ্টা করলে করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, বাংলার মানুষ স্বাধীনতার পক্ষে। অতীতে টানা হরতাল দিয়েছিলেন, কিছুই করতে পারেননি।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করার জন্য ২০১৩ সালে আপনারা মানুষ পুড়িয়েছেন, মানুষ মেরেছেন। ৫০০টি বুথ পুড়িয়ে দিয়েছেন, চারজন প্রিসাইডিং অফিসার ও ২৪ জন পুলিশ হত্যা করেছেন, সফল হননি। আবার ২০১৫ সালে ৯৩ দিনের হরতাল-অবরোধে আপনাদের নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে না সরিয়ে ঘরে যাবেন না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন এখনো। আপনার নেত্রী কোর্টে গিয়ে আত্মসমর্থন করে ঘরে ফিরে গিয়েছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মওদুদ আহমদ এই প্রেস ক্লাবে কিছুদিন আগে বলেছিলেন— ‘শেখ হাসিনার জন্য দুটি পথ খোলা আছে। যদি সেই পথ অনুসরণ না করেন তাহলে তাকে টেনেহিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামাবেন’। আমি তাকে অসম্মান করি না। তার কি সেই ক্ষমতা আছে? এত সহজ? এ সমস্ত অসাংবিধানিক বা অঘটনমূলক বক্তৃতা মানুষ পছন্দ করে না। আমাকেও মানুষ চেনেন, মওদুদ আহমদসহ তাদেরকেও মানুষ চেনেন।বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের স্মৃতিচারণায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু চাতুরতার সঙ্গে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তারই সুযোগ্য কন্যা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দেশ চালাচ্ছেন। তিনি ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ বেশ কিছু যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা জেলা প্রশাসক ছিলেন বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার। সে সময় তার ভূমিকা ভালো ছিল। কিছুদিন আগে তিনি মারা গেছেন। আর পুলিশ সুপার ছিলেন মামুন। আমরা তরুণরা কারফিউ ভেঙে আন্দোলন করতাম। কিন্তু তিনি পুলিশকে কোনো কমান্ড করতেন না। শুধু নীরবে দাঁড়িয়ে থাকতেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গা এখন আন্তর্জাতিক ইস্যু। তাদের প্রতি মানবিকতার কারণে প্রধানমন্ত্রী মাদার অব হিউমিনিটি ও স্টার অব ইস্ট উপাধি পেয়েছেন। এসব খেতাব বিএনপির পছন্দ হয় না। তবে মিয়ানমার এই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে।
সেমিনারে সংগঠনের সহসভাপতি সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি নুরুল আলমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন ও প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক হারুন হাবীব।