মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

১৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশুকে বার্মিজ ভাষা শেখাবে ইউনিসেফ

মানিক মুনতাসির

১৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশুকে বার্মিজ ভাষা শেখাবে ইউনিসেফ

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ০৪-১৪ বছর বয়সী ১৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশুকে উপানুষ্ঠানিক প্রকল্পের আওতায় বার্মিজ ভাষায় শিক্ষা দেবে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরে শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এক্ষেত্রে সব ধরনের শিক্ষা উপকরণ ও অন্যান্য ব্যয় সবই নির্বাহ করবে ইউনিসেফ। গত মাসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আলী হোসেনের পাঠানো এক চিঠিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।  চিঠির তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার আওতায় আনতে ইউনিসেফ এ প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে ইউনিসেফ চেয়েছিল বাংলা ও বার্মিজ উভয় ভাষাতেই রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা দেবে। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মতামত দিয়ে বলেছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নাগরিক নয়। এমন কি তাদের মাতৃভাষাও বাংলা নয়। তাদের মাতৃভাষা বার্মিজ। ফলে তাদের বাংলা ভাষায় শিক্ষা দেওয়া যাবে না। বার্মিজ তাদের মাতৃভাষা। বার্মিজ ভাষাতেই তাদের শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে বলে মনে করে মন্ত্রণালয়।

এ ছাড়া মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সে দেশের সরকারসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার। এ জন্য উভয় দেশের ১৫ জন করে মোট ৩০ সদস্যের একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার জন্য শনাক্তকরণ পদ্ধতিসহ অন্য সব বিষয় তদারক করছে এই গ্রুপ।

এদিকে রোহিঙ্গাদের খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মৌলিক চাহিদা পূরণে ৭১টি প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রস্তাব করেছে দেশি-বিদেশি ৪২টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও)। এ জন্য সরকারের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদনও করেছে এনজিওগুলো। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে, বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। যা বাংলাদেশের জন্য একটি বাড়তি চাপ। শুধু নিরাপত্তার জন্যই নয়, এসব রোহিঙ্গা নাগরিকের খাদ্য, চিকিৎসাসহ মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে জাতিসংঘ। এ ছাড়া কক্সবাজারের যে এলাকায় রোহিঙ্গাদের থাকার জন্য অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে, তাও ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য একটা বড় ধরনের ঝুঁকি বলে মনে করে জাতিসংঘ।

 

সর্বশেষ খবর