মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

যুদ্ধাপরাধীর সন্তান এখন পিরোজপুর আওয়ামী লীগের নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

খোলস বদলে পিরোজপুরের এক চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর সন্তান এখন আওয়ামী লীগের নেতা বনে গেছেন। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করা থেকে শুরু করে টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকর্মের হোতা এখন এই যুদ্ধাপরাধীর সন্তান। দুর্নীতি দমন কমিশন এই নেতার আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত শুরু  করলেও তার রাজনৈতিক প্রভাবে সেই তদন্ত ধামাচাপা পড়ে গেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। দুদকের  একটি সূত্র জানিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে তার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের  বরিশালের বিভাগীয় অফিসের এক উপপরিচালকের (অনুসন্ধান-২) নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়। ওই তদন্ত রিপোর্ট কমিশনে জমা পড়লেও অজ্ঞাত কারণে অদ্যাবধি কমিশন  থেকে এ ব্যাপারে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দুদকের ওই তদন্ত প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়েছে, পিরোজপুর এলজিআরডির নির্বাহী প্রকৌশলীর ভুয়া পে-অর্ডার, ব্যাংক গ্যারান্টি টেন্ডারের সঙ্গে দাখিল করে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করে। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগের এই ‘নব্য’ নেতা বিএনপির চারদলীয় জোট সরকারের সময় ছাত্রদলের কলেজ শাখার সশস্ত্র ক্যাডার ছিলেন। তখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি অবমাননাসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের নাশকতা চালায়। চারদলীয় জোট সরকারের সময় টেন্ডারবাজির পাশাপাশি ভারতীয় পণ্যের চোরাচালানিসহ অস্ত্র কেনাবেচা শুরু করে। তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই নব্য ‘আওয়ামী লীগ’ নেতার দাদা ও বাবা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পিরোজপুরের একটি ইউনিয়নের শান্তি কমিটির (পিস কমিটি) রাইফেলধারী সদস্য ছিল।

 তারা দুজনই ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকেই পিরোজপুরের একটি উপজেলার বিভিন্ন জনপদে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। অপর দিকে এই নব্য ‘আওয়ামী লীগ’ নেতার শ্বশুর এবং দাদা শ্বশুর মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হয়ে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে খুন,ধর্ষণ, লুটতরাজ অগ্নিসংযোগের সক্রিয় নেতৃত্ব দেয়।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, যুদ্ধাপরাধীর এই সন্তান নব্য আওয়ামী লীগার হয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে দলের মর্যাদা নষ্ট করছে। প্রধানমন্ত্রীর পিরোজপুর সফরের আগে দলের প্রস্তুতি বৈঠকে এই নেতার উপস্থিতিতে স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে  ক্ষোভের সৃষ্টি করে।

সর্বশেষ খবর