বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

সেই ইন্ধনদাতা ১২ দিনের রিমান্ডে

রংপুরে হিন্দু বাড়িতে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

ফেসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে রংপুরের ঠাকুরপাড়ায় হিন্দু বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কোতোয়ালি ও গঙ্গাচড়া থানায় দায়ের পৃথক দুটি মামলার আসামি রংপুর জেলা পরিষদের উপসহকারী প্রকৌশলী ফজলার রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১২ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফেরদৌস আহমেদ জানান,  রংপুরের বিচারিক হাকিম কামরুল হাসানের আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। গতকাল বিকালে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এদিকে গঙ্গাচড়া থানায় দায়ের হওয়া মামলায় ফজলার রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে রবিবার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত সাত দিন মঞ্জুর করেন। আমার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামি ফজলারকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। ফজলার হামলার ঘটনায় পাঁচ ইন্ধনদাতার একজন বলে জানান এসআই মিস্টার। ঠাকুরপাড়ার পাশের গ্রাম মমিনপুরে ফজলারের বাড়ি।

প্রসঙ্গত, ১০ নভেম্বর ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ ঠাকুরপাড়ায় হামলা চালিয়ে নয়টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বাড়ির মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক হামলাকারী নিহত ও সাত পুলিশসহ ৩০ জন আহত হন। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি ও গঙ্গাচড়া থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। দুটি মামলায় ১৫৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ২ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন প্রকৌশলী ফজলার। ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর শ্যামলী থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, ফজলারের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনায় জনবল ও অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে তদন্তে তা প্রমাণিত হয়। এ ঘটনায় আরও চারজন ইন্ধনদাতা শনাক্ত করা হয়। তারা হলেন বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সভাপতি মাওলানা ইনামুল হক মাজেদি, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য মাসুদ রানা, সদরের খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও শলেয়াশাহ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য মাওলানা মোস্তাইন বিল্লাহ। এর মধ্যে ঘটনার পরদিন জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশের কয়েকটি বিশেষ টিম কাজ করছে।

 

সর্বশেষ খবর