রবিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

আগামী বাজেটে নতুন কর আরোপ করা হবে না

মানিক মুনতাসির

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট তৈরির কাজ শুরু করেছে অর্থ বিভাগ। ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে তাদের চাহিদাপত্র তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও (এনবিআর) নতুন বাজেট প্রণয়নের প্রস্তুতি শুরু করেছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, এবারের বাজেটে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। গতানুগতিক একটি বাজেট দেওয়া হবে। নতুন করে কোনো খাতে করারোপ করা হবে না। এমন কি নতুন করে উন্নয়ন প্রকল্প না নিয়ে পুরনো প্রকল্পগুলো শেষ করার ওপর জোর দেওয়া হবে। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী বছরের বাজেটের শুধু আকারই বাড়বে। তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নতুন বাজেটের আকার হতে পারে চার লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের আকার হচ্ছে চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। আগামী বাজেটে মোট রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ধরা হতে পারে তিন লাখ ৪০ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা, যা চলতি (২০১৭-১৮) অর্থবছরের চেয়ে ১৮ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। করের আওতা বাড়ানোর জন্য এ বছর যেসব উদ্যোগ         নেওয়া হয়েছে সেগুলো সফল হলে আগামী বছরের বিশাল টার্গেট পূরণ করা কঠিন হবে না বলে মনে করে এনবিআর। সূত্র জানায়, উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য সামনে রেখে আগামী ২০১৮-১৯ বাজেটে মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হতে পারে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। যা চলতি বছর ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।

জানা গেছে, আগামী বাজেট সামনে রেখে অর্থমন্ত্রীর জন্য প্রস্তুত করা অর্থ বিভাগের এক সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন আসার আভাস নেই। জিনিসপত্রের দামও নতুন করে বাড়বে না। অভ্যন্তরীণ উত্পাদন ভালো হবে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৭ দশমিক ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা খুব বেশি দুরূহ হবে না। চলতি অর্থবছরেও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, আগামী (২০১৮-১৯) অর্থবছরের বাজেটে টাকার অঙ্কে ৬৭ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা বেশি। রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে তিন লাখ ৪০ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। বিপুল পরিমাণ এই রাজস্ব আদায় করা এনবিআরের জন্য কঠিন এক চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আর কর-ব্যতীত রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্য ধরা হতে পারে ৩৩ হাজার ১১২ কোটি টাকা, চলতি (২০১৭-১৮) অর্থবছরে যা রয়েছে ৩১ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভ্যাট খাত থেকে এক লাখ ২০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হতে পারে বলে জানা গেছে।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হতে পারে দুই লাখ কোটি টাকার মতো। চলতি বাজেটে এডিপির আকার ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। ঘাটতি প্রাক্কলন করা হতে পারে এক লাখ ২৭ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এক লাখ ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা ঘাটতি ধরা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর