মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনা ও বিজ্ঞানমনস্ক বাংলাদেশ গড়ে তোলার শপথ নিয়েছে শিশু-কিশোররা। গতকাল সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মুক্তির উৎসব-২০১৮ অনুষ্ঠানে এ শপথ নেয় তারা। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মাথায় লাল-সবুজের ক্যাপ, কণ্ঠে মুক্তির গান নিয়ে রাজধানী ও এর বাইরের বিভিন্ন স্কুলের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। খুদে শিক্ষার্থীদের এ মিলনমেলায় একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা, শহীদ পরিবারের সদস্যরা যোগ দিয়ে শুনিয়েছেন যুদ্ধের ইতিহাস। এবারের উৎসবের স্লোগান ছিল— ‘আমরা গড়ব বিজ্ঞানমনস্ক মানবিক সমাজ’। সকাল ৯টায় ছায়ানটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে দেশের গান পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী। এরপর মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী উৎসবে আসা শিক্ষার্থীদের হাত উঠিয়ে শপথ করান।

উৎসবে অংশ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ভাষা আন্দোলন হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতার মূল ভিত্তি। কে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী হবেন সে জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি। বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক আর রাজনৈতিক মুক্তির জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে। জনপ্রিয় লেখক ও অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ‘তোমাদের মতো ছেলে-মেয়েদের সংখ্যা আমাদের দেশে যত, বিশ্বের অনেক দেশের জনসংখ্যাই তত না। তাই তোমরা যদি শিক্ষিত হয়ে দেশকে ভালোবাসো, একদিন ইউরোপ-আমেরিকার ছেলে-মেয়েরা তোমাদের কাছে শিখতে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘তোমরা শুধু মন দিয়ে লেখাপড়া করো। যারা ফাঁস করা প্রশ্নে পরীক্ষা দেয় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ধরা খাবে।’ উৎসবে সাংস্কৃতিক উপস্থাপনায় অংশ নেয় চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ও ক্ষুদে গানরাজের শিল্পীরা, হযরত শাহআলী মহিলা কলেজ, ওয়াইডব্লিউসিএ উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, ব্রাইট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। সংগীত পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা, জলের গানের শিল্পীরা। সর্বশেষ দুপুরে র‌্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় মুক্তির উৎসব-২০১৮।