সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা প্রদানের বিধান রেখে পাস

যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট বিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেকার যুবকদের উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিয়ে একাডেমিক ডিগ্রি, ডিপ্লোমা ও সনদ প্রদানের বিধান রেখে ‘শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট বিল, ২০১৮’ পাস করেছে সংসদ। ঢাকা জেলার সাভার উপজেলায় আধুনিক মানসম্পন্ন কেন্দ্রীয় ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশের সর্বত্র এর শাখা বিস্তার করা যাবে। একটি পরিষদের অধীনে এ ইনস্টিটিউট পরিচালিত হবে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে গতকালের বৈঠকে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার। এর আগে বিলের ওপর আনীত সংশোধনী, জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। বিলে বলা হয়েছে, এই ইনস্টিটিউট উন্মুক্ত বিশ্ববিদালয়ের সহযোগিতায় দূরশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষাদান করবে। এ জন্য যুবকদের প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে ইনস্টিটিউট যুগোপযোগী কারিকুলাম প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। এই ইনস্টিটিউটের একটি একাডেমিক কাউন্সিল থাকবে। বিলে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রী এই ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা হবেন। ইনস্টিটিউটের নির্বাহী কাউন্সিলের প্রধান হবেন যুব ও ক্রীড়া সচিব। ১৮ ক্যাটাগরির সদস্য এই নির্বাহী কাউন্সিলে সদস্য হিসেবে থাকবেন। নির্বাহী কাউন্সিলে মনোনীত সদস্যদের তিন বছরের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হবে। নির্বাহী কাউন্সিলকে বছরে কমপক্ষে দুইবার সভা করতে হবে। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ-সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৯৯৮ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে শেখ হাসিনা জাতীয় যুব কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সশস্ত্র বাহিনীর ছয় হাজার ৩৪১ জন সদস্য : এদিকে সরকারি দলের সদস্য আনোয়ারুল আজীমের প্রশ্নের জবাবে সংসদ কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদকে জানান, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বর্তমানে সশস্ত্র বাহিনীর ছয় হাজার ৩৪১ জন সদস্য কর্মরত আছেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর পাঁচ হাজার ৪৯৭ জন, নৌবাহিনীর ৩৪১ জন, বিমান বাহিনীর ৫০৩ জন সদস্য রয়েছেন।

জরিপে ভুল হলে ফায়সালা আদালতে : সুকুমার রঞ্জন ঘোষের (মুন্সীগঞ্জ-১) লিখিত প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ বলেন, জরিপ অধিদফতর কর্তৃক কোন এলাকায় জরিপ শেষ হওয়ার পর চূড়ান্ত রেকর্ড প্রকাশ হয়। উক্ত রেকর্ডে কোনো ভুল থাকলে সেই ভুল-ত্রুটি সংশোধনের ক্ষমতা বিজ্ঞ দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার ভুক্ত। যে কোনো প্রকাশিত ভুল রেকর্ডের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট জনসাধারণ দেওয়ানি আদালতে মামলা করতে পারবেন।

আবাদযোগ্য কৃষি জমি প্রায় ৫৩ শতাংশ : সরকারি দলের সদস্য সুবিদ আলী ভূঁইয়ার (কুমিল্লা-১) প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে আবাদযোগ্য কৃষি জমি প্রায় ৭৯ দশমিক ৪৬ লাখ হেক্টর। আবাদযোগ্য কৃষি জমির মধ্যে চাষযোগ্য প্রায় ৫৩ শতাংশ।

স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে ঢাকায় ঘৃণাস্তম্ভ হবে : মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর ও আল শামসদের বিরুদ্ধে ঘৃৃণা প্রকাশে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে একটি ঘৃণাস্তম্ভ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ইতিমধ্যে স্থাপত্য অধিদফতরের মাধ্যমে এ স্তম্ভের স্থাপত্য নকশার খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। শিগগিরই নকশাটি চূড়ান্ত করা হবে।

জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে গতকাল টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মহিলা এমপি বেগম নাসিমা ফেরদৌসীর এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি। মন্ত্রী আরও জানান, সব উপজেলায়, ঘৃণাস্তম্ভ নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই। সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাওয়া গেলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

রাষ্ট্রীয় খরচে হাওয়া বদলের সুযোগ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের : মাহমুদ ?উস সামাদ চৌধুরীর (সিলেট-৩) লিখিত প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় খরচে যুদ্ধাহত পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধারা বছরে একবার দেশের অভ্যন্তরে হাওয়া বদলের সুযোগ পাবেন। সম্পূর্ণ পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বছরে একবার কক্সবাজারে আবহাওয়া পরিবর্তন বা ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ সময় তিনি মাসিক ভাতা ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধারা যেসব সুবিধা পাচ্ছেন তা তুলে ধরেন। মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাসিক ভাতা ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধারা আবাসন সুবিধা, রেশন সুবিধা, শিক্ষাভাতা, কন্যাদের জন্য বিবাহভাতা এককালীন ১৯ হাজার ২০০ টাকা, উৎসব ভাতা, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে প্রীতিভোজ, ২০ শতাংশ ও তদূর্ধ্ব পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের দেশে বিদেশে বিনা খরচে চিকিৎসাসেবা, মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলে গার্ড অব অনারসহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন/ সৎকার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন, সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫০০ বর্গফুটের বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স ও পানির বিল মওকুফ, যুদ্ধাহত পরিবারের দুই বার্নারের একটি গ্যাসের চুলার গ্যাস বিল মওকুফ, হুইল চেয়ারে চলাচলকারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের মোবাইল বিল দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয়পত্রও দেওয়া হয়েছে। এই পরিচয়পত্র দিয়ে রেল, বিমান, বাসে বিনা ভাড়ায় যাতায়াতসহ বিভিন্ন ?সুযোগ পাচ্ছেন তারা। তিনি আরও জানান, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ভাতা ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার, মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ১৫ থেকে ২৫ হাজার এবং ৭ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ পরিবারকে ২৮ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ৬৮ বীরউত্তমকে ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা, বীরবিক্রম ১৭৫ জনের অনুকূলে ৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা এবং ৪২৬ বীরপ্রতীকের অনুকূলে ৬ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার করা হয়েছে। মন্ত্রী আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বঙ্গবন্ধু ছাত্র বৃত্তি প্রদান, ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্পসহ নানা ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ ছাড়া শিগগিরই বিনা পয়সার চিকিৎসাসেবা প্রদান সংক্রান্ত প্রকল্প, মুক্তিযোদ্ধাদের বক্তব্য রেকর্ড ও সংরক্ষণ প্রকল্প এবং সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের কবর একই ডিজাইন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর