সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

দেড় হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা

বিশ্বাস-আস্থার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ধরেছে চিড়

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

দেশের ‘ওয়াল স্ট্রিট’ খ্যাত চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ। লেনদেনে আস্থা-বিশ্বাসের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা দেশের বৃহৎ এই পাইকারি বাজারে ধরেছে চিড়। শত বছর আগে গড়ে ওঠা এই বাজারে গত তিন দশকে দেড় হাজার কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে। সর্বশেষ গত সপ্তাহে দুই দিনের ব্যবধানে ১৫ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন দুজন ব্যবসায়ী। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ব্যবসায়ী সংগঠনের দুর্বল নেতৃত্ব, প্রতারণার বিচার না হওয়ায় খাতুনগঞ্জে একের পর এক প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম-সম্পাদক আহমদ রশিদ আমু বলেন, ‘কিছু কিছু ব্যবসায়ী শুরুতে ভালো দেনদেন করে বেশি বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন। পরে অন্য ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত বিশ্বাস ও লাভের আশায় ওই ব্যবসায়ীকে বাকিতে পণ্য দেন। একসময় অনেক টাকা দেনা করে ব্যবসায়ী লাপাত্তা হয়ে যান। খাতুনগঞ্জে এভাবে লাপাত্তা হওয়ার ঘটনা ঘটছে।’  

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতাদের দুর্বল নেতৃত্বের কারণেই বার বার ব্যবসায়ী লাপাত্তা হওয়ার ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী নেতা। তিনি বলেন, ‘খাতুনগঞ্জ থেকে কোনো ব্যবসায়ী লাপাত্তা হলে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো সমঝোতার নামে দুই পক্ষকে নিয়ে শালিসি বৈঠক করে। ওই বৈঠকে নামমাত্র দেনা পরিশোধ করে সমঝোতা করেন ব্যবসায়ী নেতারা। অতীতে এ ধরনের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে হয় তো ব্যবসায়ী লাপাত্তা হওয়ার ঘটনা ঘটত না।’

জানা যায়, শত বছরের অধিক সময় ধরে ঐতিহ্যবাহী এ বাজারে আস্থা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতেই বেচাকেনা হয়ে আসছে। মুখের কথায় বাকিতে কিংবা চেকের মাধ্যমে এখনো ব্যবসা করছেন পাইকারি ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা। এ আস্থা ও বিশ্বাসকে পুঁজি করে কিছু ব্যবসায়ী প্রতারণা করছেন। গত তিন দশকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী। এতে করে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে খাতুনগঞ্জে। ফলে ব্যবসায় নেমেছে ধস। একসময় খাতুনগঞ্জে প্রতিদিন গড়ে হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়িক লেনদেন হলেও এখন তা নেমে এসেছে ৩০০-৪০০ কোটি টাকায়। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ৩৯ পাওনাদারের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হন অর্জুন স্টোরের মালিক অর্জুন চন্দ্র পাল।

সর্বশেষ খবর