সংকট কাটিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বেসরকারি খাতের ফারমার্স ব্যাংক। পরিবর্তিত পরিচালনা পর্ষদ নতুন করে পরিকল্পনা করছে গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে। এজন্য ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা মূলধন বাড়ানোর প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফাত। এ ছাড়া নতুন এই পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর খেলাপি ঋণ থেকে ১৪৭ কোটি টাকা আদায় করেছে। সেখান থেকে একটা বড় অঙ্কের অর্থ গ্রাহককে ফেরত দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নগদ অর্থের ঘাটতিও অনেকটা কাটিয়ে ওঠা গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। নতুন পর্ষদ আসার পর ব্যাংকের মূলধন ৪০১ কোটি থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও তৎকালীন অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক বাবুল চিশতীর অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে চরম সংকটে পড়ে ব্যাংকটি। দুর্নীতির দায় নিয়ে তারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। ফারমার্স ব্যাংক আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সংকট কাটিয়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির প্রাতিষ্ঠানিক পরিচালক হিসেবে মনোনীত চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফাত। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। ফারমার্স ব্যাংকের কৌশলগত পরিবর্তনের আদলে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে; যার সুফল ইতিমধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
সংকট উত্তরণে ব্যাংকটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকটির প্রতি গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে এবং স্থিতিশীল অবস্থায় আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে গ্রাহকের আস্থা ফিরেছে।’
তিনি বলেন, ব্যাংকটির মূলধন রয়েছে ৪০১ কোটি টাকা। এ মূলধনকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় উন্নীতের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই অর্থের জোগান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ব্যাংকটির মূলধন বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। এ মূলধন শুধু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের থেকে উত্তোলন করা হবে। এজন্য নীতিনির্ধারকদের সহায়তায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ ছাড়া ব্যাংকটিকে স্থিতিশীল পর্যায়ে আনতে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ১ হাজার কোটি টাকার দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের প্রস্তাব বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি অনুমোদন দিয়েছে। বন্ডগুলো খুব শিগগিরই বিক্রির অফার দেওয়া হবে। চৌধুরী নাফিজ সারাফাত বলেন, ‘একটি ব্যাংকের মূল চালিকাশক্তি ওই ব্যাংকের গ্রাহক। আমরা গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়েছি। ব্যাংকের অর্থ সংকট কাটাতে ফান্ড টিম এবং আমানতকারী ও গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে রিকভারি টিম নামে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তারা তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন।’