রংপুরের মিঠাপুকুরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে ঘাঘট নদের ওপর নির্মিত দমদমা সেতুটির একটি গার্ডার ভেঙে গেছে। ফাটল ধরেছে সাত স্থানে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ এক বছর আগে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে উভয় পাশে ‘সাবধান, ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, সাবধানে যানবাহন চালাবেন’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়। তার পরও এ সেতু দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে কয়েক হাজার হালকা ও ভারী যানবাহন এবং মানুষ। ভারী যানবাহন উঠলেই সেতুটি কেঁপে ওঠে। ঝুঁকি ঠেকাতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সেতুর নিচে বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেওয়া শুরু করেছে। এতে যে কোনো সময় সেতুটি ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় লোকজন। সেতুটি ভেঙে গেলে রংপুর বিভাগের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে রংপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, ৪৬ বছর আগে সেতুটি যখন নির্মাণ করা হয় তখন মহাসড়কে এখনকার মতো যানবাহনের চাপ ছিল না। অধিক মাত্রায় যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় সেতুটি চাপ নিতে পারছে না। ফলে একটি গার্ডার ভেঙে গেছে। সাতটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেতু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেওয়া হচ্ছে। তবে মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের দরপত্র হয়ে গেছে। কাজ শুরু হলে সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করা হবে। রংপুর সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দমদমা সেতুটি বোমা মেরে ভেঙে দেয় পাক সেনারা। ’৭২ সালে তা নতুন করে নির্মাণ করা হয়। ৬০ মিটার দীর্ঘ ও ২০ মিটার প্রশস্ত সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে। রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় যাতায়াতের প্রবেশমুখ দমদমা সেতু। ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সেতুর সাত স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। তিনটি গার্ডারের একটি ভেঙে গেছে ২২ মার্চ। গত বছর জানুয়ারিতে দমদমা সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে উভয় পাশে ‘সাবধান, ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, সাবধানে যানবাহন চালাবেন’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
ঢাকাগামী কোচ এসআর ট্রাভেলসের রংপুর কাউন্টারের ব্যবস্থাপক মাজেদুর রহমান রিপন বলেন, গাড়ি নিয়ে সেতুতে উঠলেই সেতুটি দুলতে থাকে। গতকাল দমদমা সেতুতে কথা হয় ঢাকাগামী ট্রাকচালক ফজলার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, গাড়ির গতি কমিয়ে সেতু পার হতে হয়। সেতুটিতে গাড়ি উঠলেই বুকে কাঁপন ধরে যায়।