বুধবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিপথগামী করার আক্রোশে খুন করেন তানিয়া

সিলেটে মা ছেলে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতে এসে প্রায় দুই বছর আগে রোকেয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় তানিয়ার। দুজনের স্থায়ী নিবাস কুমিল্লায় হওয়ায় গড়ে ওঠে সখ্য। পরে ছোট বোন ডেকে তানিয়াকে নিজের বাসায় আশ্রয় দেন রোকেয়া। একপর্যায়ে তানিয়াকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেন রোকেয়া। সংশ্লিষ্ট করেন মাদক ব্যবসায়ও। জোর করে বিপথগামী করার আক্রোশ থেকে তানিয়া ও তার স্বামী ইউসুফ মামুন পরিকল্পিতভাবে খুন করেন রোকেয়া এবং তার ছেলে রবিউল ইসলাম রোকনকে। রোকেয়ার পাঁচ বছরের মেয়ে রাইসাকেও খুন করতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় সে। সিলেট নগরীর মিরাবাজার খাঁরপাড়ায় জোড়া খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া তানিয়া আক্তার ও তার স্বামী ইউসুফ মামুন গত সোমবার রাতে সিলেট মহানগর হাকিম হরিদাস কুমারের আদালতে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছে। রবিবার বিকালে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার থেকে মামুনকে ও সোমবার ভোরে কুমিল্লার তিতাস থানার ঘোষকান্দির বাড়ি থেকে তানিয়াকে গ্রেফতার করে পিবিআই। আদালতে জবানবন্দিতে তানিয়া জানায়, প্রথম দিকে ছোট বোনের মতো রোকেয়ার বাসায় তিনি আশ্রিত ছিলেন। একপর্যায়ে তাকে জিম্মি করে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেন রোকেয়া। রোকেয়ার চাপে দিনের পর দিন সে অনৈতিক কাজে জড়িয়েছে। একপর্যায়ে তার স্বামী সিলেটের বিশ্বনাথের মামুনও বিষয়টি জেনে যান। এরপর আক্রোশের বশবর্তী হয়ে স্বামী-স্ত্রী মিলে রোকেয়ার ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করি। পরিকল্পনামতে গত ৩০ মার্চ বিকালে নগরীর মিরাবাজার খাঁরপাড়ার রোকেয়ার বাসায় যান তানিয়া ও মামুন। রাতের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে রোকেয়া ও তার ছেলে রোকন এবং মেয়ে রাইসাকে অচেতন করেন তারা। রাত ২টার দিকে রোকেয়ার গলায় ছোরা মারে মামুন। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয় রোকেয়াকে। রোকেয়ার মৃত্যু নিশ্চিত হলে তারা ছুরিকাঘাত করে রোকনকে। এরপর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা চালায় শিশু রাইসাকে। তিনজনই মারা গেছে ভেবে রাতেই তারা পালিয়ে যায়। পরে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় রাইসা। পালানোর সময় হত্যায় ব্যবহৃত ছোরা ফেলে যায় রাস্তায়। প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল নগরীর মিরাবাজার খাঁরপাড়া মিতালি ১৫ জে নম্বর তিনতলা বাসার নিচতলা থেকে রোকেয়া বেগম (৪০), তার ছেলে রবিউল ইসলাম রোকনের (১৬) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় বাসার ভিতর থেকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয় রোকেয়ার পাঁচ বছরের শিশুকন্যা রাইসাকে। জোড়া খুনের ঘটনায় ১ এপ্রিল রাতেই রোকেয়ার ভাই জাকির হোসেন অজ্ঞাত আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। ৩ এপ্রিল রাতে এ মামলায় নাজমুল নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর