দক্ষ পরিবহন শ্রমিক গড়ে তুলতে দেশে প্রথমবারের মতো ড্রাইভিং ও মোটরযান সহকারী প্রশিক্ষণ স্কুল চালু করেছে বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ স্কুলের মাধ্যমে অদক্ষ মোটরযান শ্রমিকদের দক্ষ করে তোলা হবে। স্কুলটিতে বেকার যুবসমাজ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দক্ষ জনশক্তিতে রূপ নিয়ে নিজের আয়ের পথ সৃষ্টি করতে পারবে। বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ায় বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস, কার, সিএনজি মিলিয়ে প্রায় ১৬ হাজার যানবাহন রয়েছে। এগুলো বগুড়া থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য প্রায় ২০ হাজার। তাদের সবাই প্রশিক্ষিত নন। তারা নিজেরাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মোটরযান চালিয়ে সংসার পরিচালনা করছেন। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ড্রাইভিং ও মোটরযান সহকারী প্রশিক্ষণ স্কুল চালু করার পরিকল্পনা করেন বগুড়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলালসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা। পরিকল্পনামাফিক ২০১৭ সালে স্কুল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এরপর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন চার তলা ভবন নির্মাণ শেষ হলে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ স্কুল ও অবকাঠামো পরিদর্শন করে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদন দেয়। এ স্কুলটি পরিচালিত হচ্ছে বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃক। গত বছরের জুলাইয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান স্কুলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর ১০ জন প্রশিক্ষণার্থী নিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা করে স্কুলটি। বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ড্রাইভিং ও মোটরযান সহকারী প্রশিক্ষণ স্কুলের চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন শেখ হেলাল জানান, সড়ক দুর্ঘটনা কমানো, সড়কে অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ রোধ, নির্দিষ্ট গন্তব্যে সময়মতো পৌঁছানো, মানবিক আচরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণের পর সরকারি সনদ প্রদান ছাড়াও চাকরি পাওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানে শুধু বগুড়ার শ্রমিক নয়, সারা দেশের শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ স্কুলে মোট পাঁচটি কোর্স চালু হয়েছে। স্কুলের একাডেমিক পরিচালক কামরুল মোর্শেদ আপেল জানান, একজন অধ্যক্ষ, দুজন পরিচালক, চারজন প্রশিক্ষক এবং ছয়জন কর্মচারী নিয়ে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণার্থীর পাশাপাশি জনবল বাড়ানো হবে। অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী জাহিদ জানান, এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করে যে কেউ আয়ের উৎস খুঁজে পাবে। এ প্রতিষ্ঠানে দূরের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা করা হয়েছে।