শনিবার, ২৬ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

এবারও বিমানের হজ ফ্লাইটের শিডিউল বিপর্যয়ের শঙ্কা

মোস্তফা কাজল

চলতি বছরের হজ কার্যক্রমে বিমানের শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এবার ১৫১টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এসব ফ্লাইটে ৬৪ হাজার ৫৯৯ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে বিমান বাংলাদেশ। সম পরিমাণ হজযাত্রী পরিবহন করবে সৌদি এয়ারলাইন্সও। এ বছর ফ্লাইট শিডিউল ঠিক রাখতে বিমানের বহরে লিজে আনা হচ্ছে আরও ৪টি উড়োজাহাজ। তারপরও ফ্লাইট বিপর্যয়ের ব্যাপারে শঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। হজ এজেন্সিগুলো আগে থেকে ফ্লাইট বুকিং না দিলে এবং যথাসময়ে হজযাত্রীদের ফ্লাইটে না পাঠালে এবারও হজ ফ্লাইটের বিপর্যয় হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। গত রবিবার (২০ মে) শেষ হয়েছে হজের টিকিট বুকিংয়ের কাজ। ওই দিন পর্যন্ত মাত্র ২২ হাজার হজযাত্রীর টিকিট বুকিং হয়েছে, বুকিং হয়নি ৪৪ হাজার ৫৯৯ জনের। এদিকে গত বৃহস্পতিবার বিমান বাংলাদেশ সময়মতো টিকিট বুকিং শেষ করতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হজ অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়েছে।   

বিমান বাংলাদেশের মার্কেটিং বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, হজ ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হয় বিমানকে। হজ এজেন্সিগুলো সময়মতো যাত্রীদের আবাসন বুকিং দিলে জটিলতা কমে যায়। তবে এবারও হজ এজেন্সিগুলোর সঠিক সময়ে ফ্লাইট বুকিং  দেওয়া নিয়েই শঙ্কা কাজ করছে।

সূত্র জানায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের ঘোষিত ফ্লাইট সিডিউল অনুযায়ী ২০ মে’র মধ্যে ফ্লাইট বুকিং সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল হজ কার্যক্রমে অংশ গ্রহণকারী সব এজেন্সিকে। একই সঙ্গে বুকিং সম্পন্ন করার পর এয়ারলাইন্সগুলোর কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে হজ অফিসে জমা দিতে বলা হয়। গত ৯ মে এই নির্দেশনা দেওয়া হলেও ২০ মে’র মধ্যে একটি হজ এজেন্সিও প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে পারেনি। জানা যায়, সৌদি আরবের নিয়ম অনুসারে হজ ফ্লাইট বুকিংয়ের নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য সৌদি আরবে (মক্কা ও মদীনায়) বাড়ি ভাড়া, পরিবহন ও অন্যান্য সার্ভিস চার্জ অগ্রিম প্রদান করতে হয়। সেসব কাজ সম্পন্ন করে হজ ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। বিগত বছরগুলোতে হজ এজেন্সিগুলো হজযাত্রীদের বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য চার্জ অগ্রিম বুকিং না করায় সঠিক সময়ে ভিসার ব্যবস্থা হয়নি। তাই বিলম্বিত হয়েছে হজ ফ্লাইট। এ বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১২৮ জন পবিত্র হজ পালন করবেন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পাঠাতে ১৫১টি ডেডিকেটেট ফ্লাইট এবং হজ শেষে দেশে ফিরিয়ে আনতে ১৪৩টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ঢাকা থেকে বিমান বাংলাদেশের হজ ফ্লাইট শুরু হবে ১৪ জুলাই এবং ফ্লাইট শেষ হবে ১৪ আগস্ট। হজ শেষে ফিরিয়ে আনতে সৌদি আরব থেকে ফ্লাইট  শুরু হবে ২৭ আগস্ট। শেষ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।  জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আমরা প্রস্তুত। হজ ফ্লাইট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিমানের বহরে ৪টি উড়োজাহাজ লিজে যুক্ত হচ্ছে। ফলে হজ ফ্লাইটের পাশাপাশি নিয়মিত ফ্লাইট শিডিউল ঠিক থাকবে। এ ছাড়া সময়মতো টিকিট বুকিং শেষ করতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হজ অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে আজ। জানতে চাইলে  হজ অফিসের পরিচালক (হজ) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এবার আগেভাগে হজ ফ্লাইটের সব ধরনের জটিলতা কাটাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, হজ ফ্লাইটের শিডিউল এখনও সৌদি আরব চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়নি। এ কারণে তারা ফ্লাইট বুকিং দিতে পারেননি। এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে আলাপ করে আমরা এ সময়সীমা আবারও নির্ধারণ করব। হজ ফ্লাইট বিষয়ে বিমান বাংলাদেশের মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, হজ ফ্লাইট ঠিক রাখতে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।

বিমানের একার পক্ষে হজ ফ্লাইট ঠিক রাখা সম্ভব নয়। 

সর্বশেষ খবর