মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

চাষাঢ়ায় বোমায় ২০ জন হত্যার বিচারে দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে প্রশ্ন

১৭ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে নিহতের স্বজনদের ক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

‘চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার রায় হয়ে গেছে। ২০০২ সালে আড়াইহাজারে চার খুনের মামলার রায়ও হয়ে গেল। কিন্তু ১৭ বছর আগে চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলা চালিয়ে যে ২০জনকে হত্যা করা হলো, তার বিচারে এত দীর্ঘ সময় লাগছে কেন?’- এই প্রশ্ন তুলেছেন ২০০১ সালের ১৬ জুন ওই হামলায় প্রাণহারানো ও গুরুতর আহত হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনরা। তারা ঘটনার ১৭ বছর পূর্তিতে শহীদ মিনারে আয়োজিত স্মরণ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। এবার দিন পড়েছিল ঈদের দিনে।

১৬ জুন নিহতদের স্মরণে চাষাঢ়ায় কেন্দ ীয় শহীদ মিনারে নির্মিত হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ। সেখানে আসা স্বজনদের কেউ কেউ ডুকরে কেঁদে উঠলেন। কেউ ফেললেন নীরবে চোখের পানি। এছাড়া পাইকপাড়া কবরস্থানে নিহত ছাত্রলীগ নেতা সাইদুল হাসান বাপ্পীর কবর জিয়ারত করেন পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী। স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন সেদিনের ঘটনায় দুই পা হারানো মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চন্দন শীল ও রতন দাসসহ নিহত পরিবারের কয়েকজন।

পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, ১৬ জুনের বোমা হামলার ঘটনার প্রধান আসামি হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের বিরুদ্ধে সারা দেশে ৫১টি মামলা থাকায় যথা সময়ে তাকে নারায়ণগঞ্জ হাজির করা হয়নি। এতে করে বার বার সাক্ষ্য গ্রহণ পেছায়। আমরা চেষ্টা করছিলাম হান্নানকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে রেখে নারায়ণগঞ্জের বোমা হামলার মামলাটি যেন দ্রুত শেষ করা যায়। এর মধ্যে গত বছরে একটি মামলায় মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। তার পরেও আমরা চাই দ্রুত চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচারও যেন শেষ হয় সে প্রচেষ্টা চলছে।

১৬ জুন বোমা হামলায় দুই পা হারানো মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি চন্দন শীল জানান, ইতিমধ্যে মুফতি হান্নানের ফাঁসির আদেশ হলেও আমি তত খুশি হতে পারিনি। আমি আরও বেশি খুশি হতাম যদি আমাদের ১৬ জুন বোমা হামলা মামলায় তার সাজা হতো। তার পরেও বিচার তার নিজস্ব গতিতে চলছে।

শহরের পাইকপাড়া কবরস্থানে নিহত ছাত্রলীগ নেতা সাইদুল হাসান বাপ্পীর কবর জিয়ারত করেন সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল হাসান মুন্নাসহ পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী। এছাড়া মাসদাইর পৌর কবরস্থানেও নিহতদের কবর জিয়ারত করেন পরিবারের সদস্যরা।

আমি হতাশ : শামীম ওসমান : ১৬ জুনের বোমা হামলার মূল টার্গেট ছিলেন তৎকালীন এমপি শামীম ওসমান। ওই হত্যা মামলার বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি হতাশ। কারণ, ওই হামলার মূলে ছিল চাষাঢ়া এলাকার উবায়দুল। এই উবায়দুল সেই দিন ঘটনাস্থলে এসে আমার টেবিল চাপড়িয়ে আমাকে বলেছিল, ‘কেন আপনি আমার কাগজে স্বাক্ষর করবেন না?’ ওর সঙ্গে এসেছিল হরকাতুল জিহাদের দুই জঙ্গি মোত্তাকিম ও তার ভাই মোরসালিন। এরা এখন ভারতে কারাবন্দী।

শামীম ওসমান এমপি বলেন, এই উবায়ুদলের কথা তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বারবার বলা সত্ত্বেও তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে এত বন্দীবিনিময় হয়। কিন্তু নৃশংস ওই বোমা হামলার জড়িত মোত্তাকিন ও মোরসালিনকে কেন দেশে আনা হয় না?

সর্বশেষ খবর