মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

ছিনতাইকারীর কবলে জার্মান তরুণী

ধানমন্ডি থানায় ডায়েরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে সবকিছু খুইয়েছেন জার্মান তরুণী সুইন্ডে উইদারল্যান্ড। গত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে রাজধানীর ঝিগাতলা সীমান্ত কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন তিনি। এ ঘটনায় ওই দিনই ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ১১) করে দেশ ছেড়েছেন ওই জার্মান তরুণী। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ বলেন, তারা ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তবে কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

ছিনতাইয়ের শিকার সুইন্ডের সহপাঠী রেদোয়ান আহমেদ জানান, গত জানুয়ারিতে ধানমন্ডির পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটে ছয় মাসের ফটোগ্রাফি কোর্স করতে ঢাকায় আসেন সুইন্ডে। সুইন্ডে জার্মানির খ্যাতনামা হ্যানওভার ইনস্টিটিউটে তিন বছরের প্রফেশনাল প্রোগ্রাম করছিলেন। পাঠশালায় ছয় মাসের এক্সচেঞ্জ কোর্স ইতিমধ্যে শেষ করেছেন তিনি। চট্টগ্রামে জাহাজভাঙা শিল্প, সুন্দরবন, কুয়াকাটাসহ অনেক জায়গায় প্রচুর ছবি তুলেছিলেন তিনি। গত মার্চ মাসে তিনি ইরানেও কিছুদিন ছিলেন একটি ডকমেন্টারির জন্য। ওই ছবিগুলোও ছিল তার হার্ডড্রাইভে।

রেদোয়ান আরও বলেন, বুধবার রাতে শংকর বাসস্ট্যান্ডের কাছে আমাদের এক বন্ধুর বাড়িতে তার বিদায়ের জন্য অনুষ্ঠান ছিল। ভোরবেলা রিকশায় করে এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালের ভাড়া বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হন তিনি। দীর্ঘ সময় কষ্ট করে তোলা ছবিগুলো ছিল হার্ডডিক্সে। এ দুটি হার্ডডিস্কের জন্য বৃহস্পতিবার সারা দিনই কেঁদেছেন প্রায় অর্ধেক পৃথিবী চষে বেড়ানো এই নারী। তাঁকে কিছু খাওয়ানোও যায়নি।

ইনস্টাগ্রামে সুইন্ডে তাঁর বন্ধুদের জানিয়েছেন, ভোরবেলায় এলিফ্যান্ট রোডে নিজের অস্থায়ী আবাসে রিকশায় করে যাওয়ার সময় একটি সাদা গাড়ি থেকে এক ব্যক্তি তার ব্যাকপ্যাকটি টান মেরে নিয়ে যায়। ওই ব্যাগে তাঁর ল্যাপটপ, ক্যামেরা, ক্রেডিট কার্ড এবং তঁরা দুটি হার্ডডিস্কসহ অন্যান্য জিনিস ছিল। একটি ঘটনা পুরো বাংলাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতাটি কালো মেঘে ঢেকে দিল। সুইন্ডের বন্ধুরা জানিয়েছেন, সুইন্ডের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাঁর দুটি হার্ডডিস্ক। পর্বতময় মহাসড়ক কিংবা মরুপথে সাইকেল চালিয়ে হাজার মাইল পাড়ি দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে জার্মান তরুণী সুইন্ডে উইদারল্যান্ডের। ভ্রমণপ্রিয় এই শিক্ষার্থী গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন ফটোগ্রাফি শিখতে আর ছবি তুলতে। বাঙালি বন্ধুরা ডাকতেন স্যুভিন্দ্যা বলে। গরম আর বৈরী পরিবেশের মধ্যেই উদয়াস্ত পরিশ্রম করে দেশের বিভিন্ন জায়গার প্রচুর ছবি তুলেছিলেন তিনি। তবে রাখতে পারেননি। সব হারিয়ে শুক্রবার ভোরে কাঁদতে কাঁদতে ঢাকা ছেড়েছেন সুইন্ডে।

সর্বশেষ খবর