মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিটি নির্বাচন

বিধি লঙ্ঘনের উৎসব সিলেটে

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বিধি লঙ্ঘনের উৎসব সিলেটে

প্রতীক বরাদ্দের আগেই সিলেটে নির্বাচনী মতবিনিময় করছেন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। পথসভায় ব্যস্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান —বাংলাদেশ প্রতিদিন

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে এখনো প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। তফসিল অনুসারে, প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরই প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করবেন। কিন্তু এই আচরণবিধি মানছেন না কেউই। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার আগেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র এবং কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা। কিন্তু আগেভাগে প্রার্থীরা প্রচারণায় নামলেও সেদিকে দৃষ্টি নেই নির্বাচন কমিশনের।

সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬-এ স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, ‘কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবে না।’ আগামী ১০ জুলাই সিলেটে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে প্রার্থীদের। কিন্তু সিলেট সিটি নির্বাচনে এই বিধি মেনে চলছেন না কোনো প্রার্থী। বিশেষ করে মেয়র প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আছেন প্রথম সারিতে। গত ১৩ জুন সিলেট সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপরই সম্ভাব্য প্রার্থীরা জোরেশোরে নামেন মাঠে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ওই সময় থেকেই নগরীতে গণসংযোগ শুরু করেন। ২২ জুন আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে মনোনয়ন দেয়। ২৭ জুন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সদ্য সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন পান। সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের দলীয় সমর্থনে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করছেন। এ ছাড়া বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমসহ আরও পাঁচ মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন। এদের কেউই আচরণবিধি মানছেন না। গত ২৮ জুন নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা। সেদিন দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে রীতিমতো শোডাউন করে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান তারা। আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা ও বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিশ্চিত থাকায় এ দুই দলের মেয়র প্রার্থীরা প্রতীকের পক্ষেই ভোট চাইছেন নগরবাসীর কাছে। তারা প্রতিদিনই নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন। ‘কুশল বিনিময়ের’ আড়ালে তারা নিজ নিজ প্রতীকের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন। এমনকি কেউ কেউ মতবিনিময়, পুনর্মিলনী সভার আড়ালে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। কাউন্সিলর প্রার্থীরাও আছেন মাঠে। তারা প্রতীক না পেলেও নিজ নিজ ওয়ার্ডের ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা। অবশ্য প্রার্থীদের কেউই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি স্বীকার করছেন না। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘আগে যেভাবে নগরবাসীর খোঁজখবর নিতাম, এখনো সেভাবেই নিচ্ছি। আমি কোনো এলাকায় গেলে মানুষ ভিড় করে। এটাকে নির্বাচনী প্রচারণা বলা যাবে না।’ বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনী আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। প্রতীক পাওয়ার পরই প্রচারণা শুরু করব। এর আগে প্রচারণায় নামার প্রশ্নই ওঠে না।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর