মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে দেড় ঘণ্টা রাজপথ অবরোধ!

রোগী ও স্বজনদের দুর্ভোগ চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

আন্দোলনের নামে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা ও সাংবাদিক রুবেল খানের মেয়ের সুষ্ঠু বিচার ভিন্ন খাতে নিতে বিতর্কিত বিএমএ নেতাসহ চিহ্নিত কিছু ডাক্তার গতকাল বিএমএর ব্যানারে প্রবর্তক মোড় এলাকায় রাস্তার মাঝপথ অবরোধ করেন। এতে চসিকের সড়কবাতি মেরামতের গাড়ি ব্যবহার করেই রাস্তা বন্ধ করে রোগী, জনদুর্ভোগ ও যান চলাচলে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করে। অবশ্য দেড় ঘণ্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে সড়কের মাঝখান থেকে সরিয়ে রাস্তার পাশেই সমাবেশ করেছেন বিএমএ নেতারা। এতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) দায়িত্বরত সরকারি চিকিৎসকরাসহ অনেকেই বিতর্কিত বিএমএ নেতা ও সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া ডা. ফয়সাল ইকবালের ভয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএমএ নেতা-কর্মীদের অবরোধে গাড়িচালক, যাত্রী, পথচারী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। বিএমএর নেতাদের রোষানলে পড়ার ভয়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সিনিয়র-জুনিয়র ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় ব্যাহত হয় হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম। বিষয়টি স্বীকার করে একজন চিকিৎসক বলেন, জরুরি বিভাগে চিকিৎসক ছিল। তবে ওয়ার্ডের বেশির ভাগ চিকিৎসক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। ছিলেন চমেকের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও। অবরোধের কারণে যানজটে আটকে পড়া রিকশার যাত্রী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘স্ত্রীকে নিয়ে প্রবর্তক মোড়ে একটি হাসপাতালে চিকিৎসকের দেওয়া পরীক্ষাগুলো করতে এসেছিলাম। কিন্তু অবরোধের কারণে আধা ঘণ্টা ধরে সড়কে আটকে আছি। শিক্ষিত লোকেরা যদি মূর্খ মানুষের মতো আচরণ করে তাহলে সাধারণ লোকজন কী করবে।’ চমেকে আসা রোগীর আত্মীয় হেলাল বলেন, ‘ডাক্তারদের আন্দোলনের কারণে এখানে কেউ নেই। দেখলাম রাস্তায় সমাবেশ করছে। এমন হলে আমাদের রোগীদের কী হবে। একই সঙ্গে প্রায় সময় ডাক্তারদের ঠিকমতো পাওয়া কঠিন হয়ে যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আবদুল ওয়ারিশ বলেন, ‘বিএমএর প্রতিবাদ সমাবেশের সময় দেড় ঘণ্টার মতো সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পুলিশের অনুরোধের পর চিকিৎসকরা সড়ক ছেড়ে দেন।’ চমেক হাসপাতালের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ১৩১৩ শয্যার এ হাসপাতালে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রায় ১ হাজার ১০০ চিকিৎসক রয়েছেন। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে কয়েকশ ডাক্তার গেছেন! চিকিৎসাসেবার জন্য ওয়ার্ডে, আউটডোরে অনেক চিকিৎসক ছিলেন। জানা যায়, চট্টগ্রামে বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও চিকিৎসকের অবহেলায় রাফিদা খান রাইফা নামে এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে তদন্তকাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। রবিবার চট্টগ্রামে আসেন তারা। তদন্তকাজ শুরু করেছে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনকে নিয়ে গঠিত আরেকটি তদন্ত কমিটিও। দুটি তদন্ত দল যখন রাইফার মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে কাজ করছে ঠিক তখনই তদন্তকাজ থামাতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবরোধ করেন তারা। বিএমএর বিতর্কিত নেতাদের নেতৃত্বে অবরোধে প্রবর্তক মোড় থেকে চকবাজার পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। আশপাশের সড়কগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে তীব্র যানজট।

চিকিৎসকের বিচারসহ তিন দফা দাবি সিইউজের : চট্টগ্রামের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও চিকিৎসকের অবহেলায় সমকালের সিনিয়র রিপোর্টার রুবেল খানের আড়াই বছরের শিশু রাইফা খানের মৃত্যুর বিচার দাবিতে তিন দফা দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর