বরিশালে হয়ে গেল সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘জনগণের মুখোমুখি’ অনুষ্ঠান। এতে জনগণের মুখোমুখি হলেন ছয় মেয়র প্রার্থী। কেন তারা নির্বাচন করছেন? মেয়র নির্বাচিত হলে তারা কী করবেন? ভোটারদের এমন নানা প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিয়েছেন তারা। তবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও অনুষ্ঠানে আসেননি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ। গতকাল সকালে নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলে অনুষ্ঠিত হয় বরিশাল জেলা ও মহানগর সুজন আয়োজিত এ অনুষ্ঠান। বরিশাল মহানগর সুজনের সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। অনুষ্ঠানে বিএনপির মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব, কমিউনিস্ট পার্টির অ্যাডভোকেট এ কে আজাদ, বাসদের ডা. মনীষা চক্রবর্তী এবং জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) বশির আহম্মেদ ঝুনু অংশ নিয়ে ভোটারদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। নির্বাচিত হলে অথবা না হলেও জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন মেয়র প্রার্থীরা।
জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) বশির আহম্মেদ ঝুনু নির্বাচিত হলে পার্সেন্টেজমুক্ত সিটি করপোরেশন গড়া, দুর্নীতি ছুড়ে ফেলা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত ও ক্যাথলিক চার্চের ধর্মযাজকদের সিটি ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার নির্বাচিত হলে নগরীকে সন্ত্রাসমুক্ত করা, সিটি করপোরেশন থেকে পার্সেন্টেজ প্রথা বিদায়, অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা এবং নির্বাচিত হওয়ার পর জনগণের জন্য শতভাগ ব্যয় করার প্রতিশ্রুতি দেন। বক্তব্যে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। বাসদের ডা. মনীষা চক্রবর্তী নির্বাচিত হলে মাস্টারপ্লান বাস্তবায়ন, জনগণের মতামত নিয়ে শিল্পভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ইলিশসহ কৃষি উৎপাদনের সুষ্ঠু ব্যবহারের লক্ষ্যে অ্যাগ্রোবেজ শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট এ কে আজাদ নির্বাচিত হলে কৃষিভিত্তিক শিল্পনগরী গড়ে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, বস্তিবাসীর পুনর্বাসন, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত এবং নারী ও শিশুবান্ধব বরিশাল নগরী গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস তার বক্তব্যে জনগণের কাছে সুষ্ঠু নির্বাচনের ওয়াদা চান। তিনি নির্বাচিত হলে নগর ভবনকে ‘সেবক ভবন’ এবং নগর পিতার বদলে ‘নগরের সেবক’ নাম ধারণ করবেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশন পার্সেন্টেজমুক্ত করা, করপোরেশনের নিজস্ব আয় দিয়ে যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনাসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছয় মেয়র প্রার্থীকে নির্বাচিত হলে দুর্নীতি না করার এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করান সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। একই সঙ্গে পেশিশক্তি ও কালো টাকার প্রভাবমুক্ত থেকে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করানোর জন্য ভোটারদের অঙ্গীকার করান তিনি। সুষ্ঠু নির্বাচনের পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ভোটাররা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন বলে আশা সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের।