বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিটি নির্বাচন

একই পরিবারের তিন জন তিন দলের প্রার্থী

রাহাত খান, বরিশাল

একই পরিবারের তিন জন তিন দলের প্রার্থী

বরিশাল সিটি করপোরেশন (বসিক) নির্বাচনে একই পরিবার থেকে দুই ভাই ও এক বোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন বড় ভাই বশির আহম্মেদ ঝুনু। মেঝ বোন আয়শা তৌহিদ লুনা প্রার্থী হয়েছেন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে। আর ছোট ভাই মারুফ আহম্মেদ জিয়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী। এর মধ্যে লুনা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। লুনা এর আগে দু-দুবার সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ছিলেন। এবারের নির্বাচনে তার দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর একজনের মনোনয়ন বাতিল এবং আরেকজনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তিন ভাইবোনের রাজনৈতিক মতাদর্শ আবার ভিন্ন। বড় ভাই ঝুনু জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা শাখার সভাপতি। মেঝ বোন লুনা মহানগর বিএনপির মহিলাবিষয়ক সম্পাদক। ছোট ভাই জিয়া মহানগর যুবলীগের সদস্য। ঝুনু জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) মেয়র প্রার্থী। লুনা ১০, ১১ এবং ১২ নং ওয়ার্ডের জন্য সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। আর ছোট ভাই জিয়া ১১ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। মেয়র পদপ্রার্থী বড় ভাই ঝুনু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২৯ বছর ধরে তিনি জাতীয় পার্টির রাজনীতি করছেন। বরিশালে জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচিত হতে পারলে তিনি সিটি করপোরেশন থেকে দুর্নীতি ছুড়ে ফেলবেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন এবং মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত ও গির্জার ধর্মযাজকদের দেবেন সিটি ভাতা। আয়শা তৌহিদ লুনা বলেন, গতবার তিনি ১১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ৮ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে এবার তিনি আবার সংরক্ষিত ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন। ছোট ভাই জিয়া সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হতে পারলে দুই ভাই-বোন সমন্বয়ের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নসহ ওয়ার্ডবাসীর সেবা করার কথা বলেন লুনা। রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে বড় ভাই ঝুনুর পক্ষে ভোট চাইছেন না দাবি করে কাউন্সিলর প্রার্থী ছোট ভাই জিয়ার জন্য সবার কাছে দোয়া চান তিনি। মারুফ আহম্মেদ জিয়া বলেন, তিনি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তাদের পরিবারের সবাই রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা না থাকলেও এলাকার উন্নয়নে বিদায়ী কাউন্সিলরের ব্যর্থতার কারণে জনগণের চাপে এবার কাউন্সিলর প্রার্থী হতে তিনি বাধ্য হয়েছেন। সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে জনগণ ভোট দিতে পারলে নির্বাচিত হওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

একই পরিবারের তিন ভাইবোনের মেয়র এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বরিশাল প্রেস ক্লাব এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম ইকবাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে যে কেউই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার রাখেন। তিনি বলেন, তিন ভাইবোন প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নেতিবাচক নয়, ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা উচিত। এদিকে শুধু তিন ভাইবোনই নয়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংরক্ষিত কাউন্সিলর লুনার স্বামী তৌহিদুল ইসলামও একজন রাজনীতিক এবং জনপ্রতিনিধি। তৌহিদ পটুয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে দ্বিতীয়বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি।

সর্বশেষ খবর