বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিটি নির্বাচন

শান্ত শহর অশান্ত করছে তারা

বরিশাল

রাহাত খান, বরিশাল

শান্ত শহর অশান্ত করছে তারা

বরিশাল সিটি নির্বাচনের শান্ত পরিবেশ অশান্ত করে তুলছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। হুমকি, হামলা-পাল্টা হামলা, ইভিএম প্রশিক্ষণে বাধা, নির্বাচন কর্মকর্তাকে অস্ত্র দেখিয়ে ভীতির সৃষ্টি এবং ভোট কিনতে টাকাসহ ধরা পড়ার মতো ঘটনা ঘটছে গত কয়েক দিনে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মেয়র প্রার্থীসহ অপর পাঁচ মেয়র প্রার্থী গণমাধ্যমের কাছে এবং লিখিতভাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে আচরণ বিধি ভঙ্গ এবং হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করলেও তাদের মধ্যে কোনো সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। ফলে মেয়র প্রার্থীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠক করলেও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে টানটান উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিবাদে। সংঘাত সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া, আচরণ বিধি ভঙ্গসহ নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্নিত করার দায়ে এ পর্যন্ত সাতজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে শোকজ এবং অর্থদণ্ড করার কথা জানিয়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়। গত ১৪ জুলাই সন্ধ্যার পর নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রথম সংঘাতের ঘটনা ঘটে। ওই দিন স্বতন্ত্র কাউন্সিলর প্রার্থী মারুফ আহমেদ জিয়ার সমর্থকদের হামলায় পাঁচ বস্তিবাসী আহত হয়। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে আওয়ামী লীগের এক পক্ষ নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করে অপর পক্ষের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করে। যদিও পুলিশের তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে। সবশেষে গত রবিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহর উঠান বৈঠকে কাউন্সিলর প্রার্থী আওয়ামী লীগ সমর্থিত মজিবর রহমান এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ ঘরানার জিয়ার সমর্থকরা নিজ নিজ পক্ষের জনসমর্থন প্রদর্শন করতে গিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হন। নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের হস্তক্ষেপে একপর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত হলেও মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর ওপর রাগ করে দ্রুত বৈঠক ত্যাগ করেন। পৃথক দুটি সংঘাতের পর ওই ওয়ার্ডে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত শুক্রবার নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ইভিএম প্রশিক্ষণ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। ওই দিন বিকালে ওই ওয়ার্ডের নূরিয়া আইডিয়াল স্কুলে এবং কিশোর মজলিস বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইভিএম প্রশিক্ষণে বাধা দেয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী জকির হোসেন ভুলু। এ সময় সে নির্বাচন কর্মকর্তাদের অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি প্রদানসহ ইভিএম প্রশিক্ষণ পণ্ড করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে ভুলু এবং প্রতিদ্বন্দ্বী কে এম শহীদুল্লাহর কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সংঘাত হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সৃষ্ট ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন। ওই সব ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।  মহানগর বিএনপির সহ-সম্পাদক আনোরুল হক তারিন বলেন, অধিকাংশ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে ভোটারদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি করছে।

বিষয়টি দেখার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনের।

সর্বশেষ খবর