শিরোনাম
বুধবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুই গ্রুপের কাছে এক ফোন রেকর্ডই ট্রাম্প কার্ড

যুবলীগ নেতা হত্যা

সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগ নেতা সাজ্জাদ আলম শেখ আজাদ ওরফে আজাদ শেখ (৩৩) হত্যার ১১ দিন পর এক ফোন রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। এখন এই ফোন রেকর্ডটি দুই গ্রুপই ট্রাম কার্ড হিসেবে ব্যবহার করছে। ফাঁস হওয়া ফোনালাপে বিভিন্ন আকার ইঙ্গিতে হত্যার নির্দেশ দেন মানিক নামের এক যুবক। জানা যায়, নিহত আজাদ শেখ মৃত্যুর মাস দুয়েক আগে গ্রুপ বদলিয়ে পৌর মেয়র ইকরামুল হক টিটু ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট. মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলয়ে যোগ দেন। আর ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত-উর-রহমান শান্ত বলয়ে থেকে মহানগর যুবলীগের পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন নিহত ওই যুবলীগ নেতা। ফোনালাপটি বাংলাদেশ প্রতিদিনের হাতেও রয়েছে। সেখানে চার জনের কথপোকথন হয়। এক পর্যায়ে শোনা যায়, মানিক নামের এক যুবক অপর প্রান্তে বলছে ‘অহনা আজাদ মিয়ারা তাগোর বাড়ির সামনে, তুই এগোর ওইহানে যা, রাস্তা ক্লিয়ার। এইহান দিয়া শশ্মান, হেগোর কোনো লোক নাইকা। তুই যা, গিয়া কাম কইরা লাগা।’ ফোনালাপের কিছুক্ষণের পরই মূলত আজাদ শেখ নিহত হয়। তবে ফোনালাপ নিয়ে শান্ত বলয়ের দাবি, মানিক নামের ওই যুবক নিহত আজাদ শেখের সহচর ছিল। শান্তকে ফাঁসাতেই তাকে দিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে প্রতিপক্ষ গ্রুপ। অন্যদিকে একই বিষয়ে টিটু-মোয়াজ্জেম গ্রুপের দাবি, ৪ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ওই রেকর্ডটি কয়েকটি খণ্ডে বিভক্ত। পূর্ণাঙ্গ কল রেকর্ডটি বের করা দরকার। কল রেকর্ডটি যে ফাঁস করেছে তাকে আটক করলেও অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। এদিকে হত্যাকাণ্ডের ১৪ দিন পর এখনো মামলা হয়নি। উদ্ধার হয়নি কোনো ধরনের অস্ত্রও। নিহতের পরিবার ঘটনার দুদিন পর একটি এজাহার দেয় থানায়।

আর ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের ছেলে মোহিত উর রহমান শান্ত প্রধান আসামি থাকায় এজাহার নথিভুক্ত করা হচ্ছে না। আর পুলিশ বলছে, তদন্তের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, উপরের নির্দেশেই মামলা এখনো নথিভুক্ত হয়নি। আর বিদায়ী পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলছেন, যেহেতু শান্ত মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ধর্মমন্ত্রীর সন্তান তাই মামলা নেওয়ার আগে তদন্ত করা হচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসী বলছেন, আজাদের গ্রুপ পরিবর্তন করার পরপরই প্রকাশ্যে আকুয়া এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলি হতো তাদের মধ্যে। এক পর্যায়ে আজাদ শেখের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর আগে ধর্মমন্ত্রীর ছোট ভাই প্রয়াত আফাজ উদ্দিন সরকারের কার্যালয়ে গুলি চালায় আজাদ শেখ।

গত ৯ তারিখ এক সংবাদ সম্মেলনে নিহত আজাদ শেখের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার দাবি করেন তার স্বামীকে গুলি, জবাই ও কুপিয়ে হত্যার পর কলিজাও নিয়ে যায় খুনিরা। শান্তর নির্দেশই বাস্তবায়ন করেছে তারা।

সর্বশেষ খবর