সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগ কোনো ইউনিটেই নেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি। প্রায় এক দশক ধরে ‘ভারপ্রাপ্ত’ দিয়ে চলছে জেলা কমিটি; অন্যদিকে আহ্বায়ক কমিটিতেই চার বছর পার করেছে মহানগর কমিটি। এতে করে সিলেট যুবলীগ হয়ে পড়েছে গতিহীন, স্থবির হয়ে পড়েছে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড। একই সঙ্গে হতাশা ঘিরে ধরেছে পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীদের। তবে এই স্থবির অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এবার কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতাদের ডেকে নিয়ে দেওয়া হয়েছে চূড়ান্ত সতর্কবার্তা। চলতি মাসেই সম্মেলন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মহানগরের নেতাদের; আর সম্মেলন করতে অপারগতা প্রকাশ করায় জেলা যুবলীগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে যুবলীগ চেয়ারম্যানের কাছে। জানা যায়, সম্মেলনের মাধ্যমে ২০০৩ সালে সিলেট জেলা যুবলীগে জগদীশ চন্দ্র দাশ সভাপতি ও আজাদুর রহমান আজাদ সাধারণ সম্পাদক হন। তিন বছর মেয়াদি ওই কমিটি পাঁচ বছর কাটিয়ে ২০০৮ সালে দায়িত্ব ছাড়ে। এ দুই নেতা সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নেতৃত্ব ছাড়েন। তখন শামীম আহমদকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও খন্দকার মহসিন কামরানকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই ভারপ্রাপ্ত গত প্রায় এক দশকেও সম্মেলন করতে ব্যর্থ। কেন্দ্র থেকে একাধিকবার আহ্বায়ক কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও সিলেটের নেতাদের মতবিরোধে সে চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। এদিকে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে আলম খান মুক্তিকে আহ্বায়ক ও চারজনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে মহানগর যুবলীগের ৬১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। তিন মাসের মধ্যে ২৭টি ওয়ার্ডে সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব ছিল তাদের। কিন্তু আহ্বায়ক কমিটি চার বছর কাটিয়ে দিলেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি। এই সময়ে ২০টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করতে পেরেছে তারা।
সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সিলেট যুবলীগের স্থবিরতার বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ জন্য সিলেটে যুবলীগে গতি আনার চেষ্টা হিসেবে গত সোমবার জেলা ও মহানগর শাখার নেতাদের ঢাকায় ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে সিলেট জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামীম আহমদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মহসিন কামরান, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আলম খান মুক্তি, যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিক জায়গীরদার, সেলিম আহমদ সেলিম, সাইফুর রহমান খোকন ও আসাদুজ্জামান আসাদকে নিয়ে বৈঠকে বসেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ।
অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে আগামী ২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যে কোনো দিন সম্মেলনের আয়োজন করতে মহানগর যুবলীগের নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকি সাতটি ওয়ার্ড কমিটি গঠনের নির্দেশও দেওয়া হয়। জেলা যুবলীগকে সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হলে ভারপ্রাপ্ত নেতারা তা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন সিলেট জেলা যুবলীগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার যুবলীগ চেয়ারম্যানের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়।