শনিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মাছ ও ডিমের দাম কমেনি শীতের সবজি চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাছ ও ডিমের দাম কমেনি শীতের সবজি চড়া

রাজধানীর নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজারগুলোতে উঠেছে শীতকালীন নানারকম সবজি। দাম চড়া হলেও এই টাটকা সবজি কিনেও খুশি কোনো কোনো ক্রেতা। আবার বাজারভেদে কোনো কোনো সবজির দামের হের-ফের দেখা যায়। আশার কথা হলো— শীত বাড়ার সঙ্গে এসব সবজির দাম কমবে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। গত দুই সপ্তাহেও ডিমের দাম না কমায় হতাশ ক্রেতারা। এ সময়ে ডিমের দাম ডজনপ্রতি বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আবার মাছের সরবরাহ ভালো থাকার পরও দাম একটু বেশি। চালের বাজার স্থিতিশীলতার দেখা মিলেছে। গতকাল সরেজমিন রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার, নতুন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন ধরনের শীতের সবজি বিক্রি হচ্ছে। এসব সবজির মধ্যে শিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়, ফুলকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতিটি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও বেগুন প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায়। এ ছাড়া ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি, গাজর ৭৫ টাকা, মুলা ৪৫ টাকা, করলা ও চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি। তবে শীতের নতুন আলু বাজারে আসেনি এখনো। ১৫ দিনের মধ্যেই নতুন আলু বাজারে পাওয়া যাবে বলে বিক্রেতারা জানান। এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মহাখালী কাঁচাবাজার ও নতুন বাজারের তুলনায় কারওয়ান বাজারে শীতের সবজি একটু কম দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারভেদে রয়েছে দামের ভিন্নতা। কারওয়ান বাজারের এক দোকানে শিমের কেজি ১০০ টাকা হলেও নতুন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আবার মহাখালী কাঁচাবাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। দাম কম-বেশির বিষয়ে বিক্রেতাদের দাবি ভালো মন্দের জন্য হয়ে থাকে। মহাখালী কাঁচাবাজারের এক সবজি বিক্রেতা জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরেই শীতের নানা ধরনের সবজি বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে সরবরাহ বাড়ছে। এসব সবজি নতুন বলে বাজারে দাম কিছুটা বেশি। সংশ্লিষ্টরা জানান, শিম, ধুন্দল, ফুলকপি, বাঁধাকপি বেশি আসছে খুলনা, কুষ্টিয়া ও যশোর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা থেকে। এসব এলাকায় উঁচু জায়গায় সবজির চাষ ভালো হয়। এর বাইরে যেসব এলাকায় বন্যার পানি সরে গেছে, সেখানেও আগাম সবজির চাষ শুরু হয়েছে। আগামী একমাসের মধ্যে শীতকালীন সব ধরনের সবজি মানুষ সাধ্যমতো দামে কিনতে পারবে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে রাজধানীর কারওয়ানবাজার, হাতিরপুল, শান্তিনগর, মানিকনগর, গোপীবাগ ও মতিঝিলসহ কয়েকটি বাজারে গত একমাসের ব্যবধানে ডিমের দাম বেড়েছে তিনদফা। এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহে দাম বাড়ার হার ছিল সবচেয়ে বেশি। পাইকারি ডিম ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতি ডজন ডিম ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। এক সপ্তাহ আগেও ৯৫-১০০ টাকা ডজনে ডিম বিক্রি করেছেন। তবে খুচরা বাজারে ৯ থেকে ৯.৫০ টাকা দরে প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসাবে ডজন প্রতি এ দোকানগুলো ডিম বিক্রি করছে ১১০ থেকে ১১৪ টাকা দরে। ডিম ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে ডিমের চাহিদা যে পরিমাণে বেড়েছে, খামারিরা সে পরিমাণে সরবরাহ করতে পারছেন না। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়ে গেছে। তবে দাম বাড়লেও আমাদের বিক্রি কমেনি। আবার লাভও বাড়েনি। কারণ, আমাদেরও বাড়তি দামে ডিম কিনে আনতে হচ্ছে।’

গত সপ্তাহের চেয়ে আরও বেড়ে গেছে কয়েক ধরনের মাছের দামও। ইলিশ মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকেই অন্যান্য মাছের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল প্রতি কেজি পাবদা মাছ ৫০০-৫৫০ টাকা দামে বিক্রি হয়। টেংরা মাছ মানভেদে ৪৮০-৬০০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ ১৪০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়। কিন্তু তেলাপিয়া মাছ সাধারণত ১৩০-১৪০ টাকা কেজি দরেই বিক্রি হয়। এদিকে টেংরা মাছ অন্য সময়ে সাধারণত মানভেদে ৩৫০-৪৫০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়। এখন এই মাছের দাম মানভেদে ৪৫০-৫৫০ টাকা। এ ছাড়া রুই মাছের দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে মাঝারি আকারের যে রুই ৩০০-৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, এখন প্রতি কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে ২৮০-৩০০ টাকায়। এর চেয়ে ছোট আকারের রুই মাছ প্রতি কেজি ১৮০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কই মাছ কেজি ১৫০-২২০ টাকায়, সরপুঁটি আকারভেদে ১৮০-২২০ টাকা, পাঙ্গাস ১৩০-১৬০ টাকা, ছোট মলামাছ ৩৫০-৪৫০ টাকা, চাষের শিং ও মাগুর মাছ ৫০০-৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে বেশ কিছুদিন ধরেই স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে পিয়াজের বাজার। প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ ৪৫ টাকা এবং আমদানি করা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। চালের বাজারেও নেই তেমন কোনো পরিবর্তন। গুটি স্বর্ণা  মোটা) ৪০ টাকা, পাইজাম ৪১-৪২ টাকা, বিরি আটাশ ৪৩-৪৫ টাকা, মিনিকেট (নিম্নমান) ৫০-৫৫ টাকা, মিনিকেট (ভালো মান) ৫৮-৬০ টাকা এবং নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা দরে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর