সোমবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জামায়াতের দুর্গে অস্তিত্ব সংকট

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

জামায়াতের দুর্গে অস্তিত্ব সংকট

চট্টগ্রামের পাঁচ দুর্গে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে জামায়াতে ইসলামী। একসময় জেলার পাঁচ উপজেলা সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ে জামায়াতের ‘অলিখিত শাসন’ চললেও এখন সেই জামায়াত-শিবিরের কর্মীরাই এলাকাছাড়া। তবে এলাকায় অবস্থানহারা হলেও কৌশলে চলছে তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা। চলছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজস্ব প্রার্থীদের জেতাতে যাবতীয় প্রস্তুতি। চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) এ কে এম এমরান হোসেন বলেন, ‘অতীতের নাশকতার রেকর্ড দেখে কিছু উপজেলাকে চিহ্নিত করেছি। নাশকতাকারীরা যাতে ফের সংঘবদ্ধ হতে না পারে সেদিকে নজর রয়েছে আমাদের।’ তিনি বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট রয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হবেই। এখানে দলীয় বিষয়টা বিবেচনা করা হয় না।’ জামায়াতের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রকাশ্য রাজনীতি করতে গেলেই পুলিশ গ্রেফতার করে। তাই জামায়াতের ঘাঁটিগুলোতে  প্রকাশ্যে রাজনীতি করা যায় না।’

জানা যায়, প্রশাসন কঠোর অবস্থানে চলে যাওয়ার পর জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডের নেতা-কর্মীরা আড়ালে চলে যায়। তারা নিজেদের সংগঠিত করতে গোপনেই করছে ঘরোয়া মিটিং। একই সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট এবং ঐক্যফ্রন্টের হয়ে শক্তি প্রদর্শন করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। ঐক্যফ্রন্টের সভা-সমাবেশে জামায়াত-শিবিরের নিজস্ব কোনো সাইনবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন না থাকলেও উপস্থিতি জানান দিতে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। এ ছাড়া জামায়াতের ছাত্রশিবির ও ছাত্রী সংস্থা, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ও চাষী কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন নামের অঙ্গ-সংগঠনগুলোকে সক্রিয় করা হয়েছে। গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে চট্টগ্রামের পাঁচ  উপজেলা নাশকতার ধ্বংসযজ্ঞের স্বর্গ হয়ে ওঠে।  গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, সংখ্যালঘু-আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট, উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ও আদালত ভবনে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের ওপর হামলাসহ ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়।  জামায়াতের এক নেতা বলেন, জামায়াতের নির্বাচনী নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। তাই বিকল্প চিন্তা থেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত। প্রার্থী নির্বাচন বাছাই কমিটি এরই মধ্যে প্রার্থী একরকম চূড়ান্ত করেছে। চট্টগ্রাম জেলার পাঁচ সংসদীয় আসনে নির্বাচন করার লক্ষ্যে মাঠ তৈরি করেছে জামায়াত। এরই মধ্যে প্রার্থীও একরকম চূড়ান্ত করেছে তারা। প্রার্থীরা হলেন—চট্টগ্রাম-১ : সাইফুর রহমান, চট্টগ্রাম-৪ : আনোয়ার সিদ্দিকী চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১০ : শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ : আ ন ম শামসুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম-১৬ : জহিরুল ইসলাম।

সর্বশেষ খবর