শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিদ্রোহী প্রার্থীর নেপথ্যে নারী জনপ্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনে বিএনপি-আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী প্রার্থী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। দল ও দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দলের নেতারাও বিব্রত। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত একজন নারী জনপ্রতিনিধি যিনি জামায়াত-বিএনপির ঘনিষ্ঠ, যার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের আমির সম্প্রতি গোপন তথ্য ফাঁস করেছেন— তার ইশারায় এসব ব্যক্তি মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে হঠাৎ করেই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। জানা গেছে, দলকে বেকায়দায় ফেলতে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন শ্রমিক লীগের সমালোচিত নেতা  কাউসার আহমেদ পলাশ, যার বিরুদ্ধে সরকারি জমি ও বুড়িগঙ্গা তীর দখলের অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে একই আসনে বিএনপি থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক এমপি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন (সোনারগাঁ) থেকে আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হলেন প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান ও বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ শাহ আলম। এই আসনে বিএনপি থেকে বিকল্প হিসেবে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ থেকে জাতীয় পার্টি তথা মহাজোটের প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কাউসার আহমেদ পলাশ, গিয়াসউদ্দিন ও কায়সার হাসনাত বিদ্রোহী হতে এত সাহস পান কোথা থেকে? দলের চেইন অব কমান্ড না মেনে শীর্ষ নেতৃত্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব বিএনপি-আওয়ামী লীগের নেতা দলকে বিব্রত অবস্থায় ফেলতেই কারও সুতার টানে এই কাজটি করেছেন। তারা জানান, ওই তিনজন বিশেষ একজন নারী জনপ্রতিনিধির কাছের লোক। প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের একত্রে দেখা গেছে। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সেই জনপ্রতিনিধি জেলা আওয়ামী লীগের একটি শীর্ষ পদ দখল করে রাখলেও গোপনে গোপনে তিনি বিভিন্ন সময় বিএনপি-জামায়াতের স্বার্থ উদ্ধার করেছেন। সম্প্রতি নাশকতার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের আমির মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমেদ গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন- তাদের পারপাস সার্ব করতে বিভিন্ন সময় ওই নারী জনপ্রতিনিধি গোপনে কাজ করেছেন। যে কারণে জামায়াত ও বিএনপি ওই নারী জনপ্রতিনিধিকে পছন্দ করে এবং নির্বাচনে পাস করাতে তারা বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। জামায়াত আমিরের পুলিশের কাছে দেওয়া সেই জবানবন্দির রেকর্ড পরে ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায় এবং বিষয়টি জাতীয় গণমাধ্যমেও প্রকাশ হয়। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, দলকে বিভ্রান্ত করতে ও বিপাকে ফেলতে ওই নারী জনপ্রতিনিধির এমন ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

সর্বশেষ খবর