শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

কোটি টাকা আত্মসাৎ জিনের বাদশা ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ক্যাবল অপারেটরদের নিজস্ব চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। কখনো দয়াল বাবা, কখনো সাধু সাধক বলেও পরিচয় দেন। এমনকি মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা সমাধানের নামে হাতিয়ে নিতেন কোটি টাকা। সংঘবদ্ধ এমন এক প্রতারক চক্রের মূল হোতা কথিত জিনের বাদশা জুবায়ের আহমেদ সুমনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে সিরিয়াস ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, গতকাল সকালে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার ইন্দ পুরী ইন্টারন্যাশনাল হোটেল থেকে চক্রের মূল হোতা কথিত জিনের বাদশা সুমনকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি জিনের বাদশা, দয়াল বাবা সেজে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান দেবেন বলে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতেন। সেখানে লটারি, গুপ্তধন, জটিল রোগ থেকে মুক্তি, পাওনা টাকা আদায়, দাম্পত্য কলহ, ভালোবাসার মানুষকে বশে আনার কথা উল্লেখ করতেন। পরে মানুষকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিতেন।

সিআইডি কর্মকর্তা জানান, সোহেল মোল্লা নামে এক ব্যক্তি এ প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে ৪২ লাখ ২৫ হাজার টাকা খুইয়েছেন। এ বিষয়ে ২২ জুলাই ভোলার বোরহান উদ্দিন থানায় একটি মামলা  হয়। ওই মামলার তদন্তে ভুক্তভোগীর বক্তব্যে ও তথ্য-প্রমাণে সুমনের নাম বেরিয়ে আসে। মাসিক ২০ হাজার টাকা দিয়ে তৈয়েবুর রহমান নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রচার করতেন। তারা বিভিন্ন দরবার শরিফের নাম ব্যবহার করে সব সমস্যার সমাধান দিতে পারে বলে বিজ্ঞাপন প্রচার করতেন। এসব দেখে সাধারণ মানুষ ফোন করলে এদের খপ্পরে পড়তেন।

প্রতারক সুমন ২০১১ সালে ৫ ডিসেম্বর বোরহান উদ্দিন থানার একটি মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি সুমনের তিন সহযোগী জাফর, সাগর এবং ছামিরকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এতেও সুমনের নাম উঠে এসেছে।

সিআইডির ডিআইজি মো. শাহআলম জানান, প্রতিদিনই প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। গণমাধ্যমের বিজ্ঞাপন দেখে সহজেই প্রতারণার শিকার হয় সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি ঢাকার এক শিক্ষিত গৃহবধূ প্রতারণার শিকার হয়ে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা খুইয়েছেন।

আমরা এ কথিত জিনদের দুই ভাগে ভাগ করেছি। একটি হচ্ছে ‘টিভি জিন’ এবং আরেকটি হচ্ছে ‘মোবাইল জিন’। টিভি জিনদের কাছে গিয়ে মানুষ নিজেরাই প্রতারিত হন। আর মোবাইল জিন ফোন করে ভিকটিমদের ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করেন।

সর্বশেষ খবর