শনিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
নির্বাচনী হাওয়া সারা দেশে

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে কৌশলী দুই দল

খুলনায় ভোট কেন্দ্র প্রস্তুত

সামছ্জ্জুামান শাহীন, খুলনা

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে কৌশলী দুই দল

খুলনার ছয়টি আসনের ৭৮৬টি ভোট কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। শেষ মুহূর্তে গতকাল বিকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে আনা হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) সরঞ্জামাদি। কেন্দ্রে পৌঁছানো হচ্ছে ব্যালট পেপার ও ভোটবাক্স। এদিকে ভোট কেন্দ্রে কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের উপস্থিতি বাড়াতে কৌশলী ভূমিকা নিয়েছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রভিত্তিক সমমনা ভোটারের তালিকা তৈরি করে ভোট কেন্দ্রে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে মাঠে নেমেছে। অন্যদিকে বিএনপি ভোট কেন্দ্রে বিকল্পভাবে এজেন্ট নিয়োগ ও ভোটারদের উপস্থিতি বাড়াতে সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্র তৈরি করেছে।  বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে আমাদের সক্রিয় নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কয়েকটি স্থানে ভোটের এজেন্ট গ্রেফতার করেছে। শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে বিএনপির নেতা-কর্মী থাকতে না পারলেও সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন বলেন, সুষ্ঠুভাবে ভোট পরিচালনার জন্য কেন্দ্রভিত্তিক আওয়ামী লীগের কমিটি করা হয়েছে। সাধারণ ভোটারদের উৎসাহিত করতে ও ভোটপ্রদানে সহযোগিতা করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, তফসিল অনুযায়ী গতকাল সকাল ৮টায় প্রচারণা শেষ হলেও খুলনা বিএনপি কার্যালয়ে বেলা ১১টা থেকে পরপর তিনটি সংবাদ সম্মেলন করেন খুলনা-১, ২ ও ৩ আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীরা। প্রত্যেকেই তাদের নেতা-কর্মীদের গণগ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। খুলনা-৩ আসনের প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল                 বলেন, ‘এলাকায় পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা ভীতির মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। শাসক দলের সন্ত্রাসীরা দলের নেতা-কর্মী এবং এমনকি মহিলা দলের নেতা-কর্মীদের বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে, যেন তারা ভোট কেন্দ্রে না যায়।’ খুলনা-২ আসনে বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ১৫৭টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৯৫টিকে আমরা চরম ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছি। এখানে বিগত সিটি নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা ও ভোট কারচুপি হয়েছে। তিনি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ভোটারদের নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে আসা ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাইকিং করার আহ্বান জানান। মঞ্জু বলেন, নানা বাধার মুখে প্রার্থীরা তাদের প্রচারণা মোটামুটিভাবে শেষ করেছেন। এখন ভোটারদের কিছু করে দেখানোর পালা। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার রক্ষায় নির্বাচনের দিন সকাল থেকেই কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান তিনি। বিএনপি নেতারা বলেন, দলের দায়িত্বশীল নেতা ও এজেন্ট গ্রেফতার হওয়ায় বিকল্পভাবে এজেন্ট নিয়োগ করা হচ্ছে। যেসব নেতা এলাকায় সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত, তাদের মাধ্যমে ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে।  এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা এস এম কামাল হোসেন বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটারদের মাঝে ভোটার স্লিপ বিলি করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তাদের উৎসাহ দেওয়া ও সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটিকে। এ ছাড়া দলীয় এজেন্টকে ভোটগণনা শেষ পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রে থাকতে বলা হয়েছে। খুলনায় ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, প্রতিটি ভোট কেন্দ্রকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না।

 

 

সর্বশেষ খবর