শিরোনাম
সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আনোয়ারা শান্তিপূর্ণ পটিয়ায় সংঘর্ষ

চট্টগ্রাম

ফারুক তাহের, আনোয়ারা-পটিয়া (চট্টগ্রাম) ঘুরে

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু পার্শ¦বর্তী চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে ভোটের আগের দিন রাতে এবং ভোট চলাকালে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ৭/৮ জন। পটিয়ার নির্বাচনী মাঠ ছিল সারা দিনই উত্তপ্ত। বহু কেন্দ্র থেকে ভোটাররা ভোট না দিয়ে ফিরে গেছেন। আবার যে কেন্দ্রে শিক্ষার্থী কিশোর আবু সাদেক নিহত হয়েছেন, সেই কেন্দ্রে (মালিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়) দীর্ঘক্ষণ ভোটগ্রহণ ছিল বন্ধ। এ ছাড়া কুসুমপুরা, হরিণখাইন, গুরুনখাইন, বানিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শান্তিরহাটসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেই তুলনায় আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসনে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে পশ্চিম আনোয়ারার বটতলী, বারশত ও রায়পুর ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এসব কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক কেন্দ্রে বিএনপির চিহ্নিত নেতা-কর্মীদের ভোট কেন্দ্রেও প্রবেশ করতে দেয়নি। আনোয়ারা রায়পুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার মোহাম্মদ  ইয়াছিন গতকাল বেলা ১১টার দিকে বলেন, আমরা তিন ভাই একসঙ্গে ভোট দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে যাই। লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে গেলে আমাদের লাইন থেকে বিতাড়ন করে আওয়ামী লীগের লোকেরা। তারা আমাদের ভোট দিতে নিষেধ করে, বাড়াবাড়ি করলে অবস্থা খারাপ হবে বলেও হুমকি দেয়। এ অবস্থায় আমরা ভোট না দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসতে বাধ্য হই। পরে শুনেছি আমার মতো আরও অনেকেই ধানের শীষে ভোট দেবেÑএই অজুহাতে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই চিত্র কেবল রায়পুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নয়, উত্তর গহিরা, খৌর্দ্দ গহিরা ভোট কেন্দ্রেও এই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন অনেক ভোটার। অনেক কেন্দ্রে ভোটাররা জাল ভোটের শিকারে পড়ে নিজেদের ভোটও দিতে পারেননি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া আসনে এবারের নির্বাচনী পরিস্থিতি ছিল বেশ সংকটজনক। দুইবারের নির্বাচিত এমপি গাজী শাহজাহান জুয়েলকে দল মনোনয়ন না দিয়ে তরুণ ব্যবসায়ী এনামুল হককে মনোনয়ন দেওয়ায় দলের অনেকেই খুশি হয়েছিলেন। রাজনীতির মাঠে দক্ষ খেলোয়াড় না হলেও এলাকার সাধারণ মানুষ এনামুল হককে গ্রহণও করেন বলা যায়। তাই ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী শামসুল হক চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে এনামুল হকের কর্মী-সমর্থকরাও পাল্লা দিতে শুরু করেন। এতেই ঘটে যত বিপত্তি। অধিকাংশ কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিতরা কেন্দ্রে পাহারা দিতে শুরু করেন। অনেকে কেন্দ্রে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার আপ্রাণ চেষ্টাও চালিয়ে ব্যর্থ হন। এতে বিভিন্ন কেন্দ্রে উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ রকম একটি ঘটনার শিকার হয়ে নিহত হলেন মাত্র ১৬ বছরের কিশোর আবু সাদেক। এ ছাড়া শনিবার রাতে পটিয়ার গুরুনখাইন এলাকায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হন যুবলীগ নেতা দিল মোহাম্মদ।

সর্বশেষ খবর