শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ছাত্র সংসদ নেই তবু দিতে হয় ফি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

ছাত্র সংসদ নেই তবু দিতে হয় ফি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। প্রতিষ্ঠার ১১ বছরেও তৈরি করা হয়নি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ গঠনের কাঠামোগত রূপ। নেই কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগও। ছাত্র সংসদ না থাকলেও বছরের পর বছর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি বাবদ অর্থ আদায় করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছাত্রদের কাছ থেকে নেওয়া এই অর্থ কোথায়, কীভাবে ব্যয় হচ্ছে তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের কোনো অস্তিত্ব না থাকলেও প্রতি বছর এ বাবদ ফি আদায় করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সেশনে ভর্তি হন মোট ১০ হাজার ৯৪৭ জন শিক্ষার্থী (২০১৭-১৮ সেশন পর্যন্ত)। ভর্তিকালীন সময়ে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বাবদ ২০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। সে হিসেবে এ পর্যন্ত ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৪০০ টাকা জমা থাকার কথা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ফান্ডে। কিন্তু এই অর্থের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে। একাধিকবার এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নানান টালবাহানায় তথ্য দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ট্রেজারার উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য দিতে পারবেন। কিন্তু উপাচার্য বেশির ভাগ সময়ে ঢাকায় অবস্থান করার কারণে তার কার্যালয়ে দেখা পাওয়া সম্ভব হয়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে ছাত্র সংসদ না থাকলেও বেরোবি শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে বেরোবি শাখা ছাত্রলীগ মাঝে মাঝে আওয়াজ তুললেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সঠিক নেতৃত্ব বের করে আনার অজুহাতে দেড় বছর পার হয়ে গেলেও কমিটির পূর্ণাজ্ঞরূপ দিতে পারেনি বেরোবি শাখা ছাত্রলীগ। কমিটিবিহীন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে অনেকটা ছত্রভঙ্গ অবস্থান করছে। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর উপস্থিতি বেরোবিতে অনেকটা ডুমুরের ফুলের মতোই। তবে বামধারার ছাত্রসংগঠন-গুলো মাঝে মধ্যে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দিলেও মাঠে সংগুঠনগুলোর উপস্থিতি নগণ্য থাকায় শেষ পর্যন্ত কুলে উঠতে পারে না।

প্রতিকূল পরিবেশ আর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অনেকটা মেরুদ হীন হয়ে পড়েছে ছাত্র সংগঠনগুলো। সম্প্রতি বিষয়টি আরও নাজুক পরিস্থিতির আকার ধারণ করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর