শিরোনাম
বুধবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

মাস্টারপ্ল্যানে দক্ষিণ সিটি প্রকল্পের অপেক্ষায় উত্তর

নতুন ওয়ার্ডে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু

জয়শ্রী ভাদুড়ী

সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়া নতুন ওয়ার্ডগুলোতে নাগরিক জীবনের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুত করতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এদিকে উন্নয়ন কাজের জন্য তৈরি করা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প প্রি-একনেকে পাস হয়ে এখন একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে। ২০১৭ সালের ৯ জুন প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিতে (নিকার) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আটটি করে ইউনিয়ন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে একই বছরের ৩০ জুলাই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়া ১৬ ইউনিয়নে ৩৬টি নতুন ওয়ার্ড গঠন করে গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ডিএসসিসিতে যুক্ত হওয়া ইউনিয়নগুলো হলো শ্যামপুর, মাতুয়াইল, ডেমরা, দনিয়া, সারুলিয়া, দক্ষিণগাঁও, নাসিরাবাদ ও মান্ডা। আর ডিএনসিসিতে যুক্ত হওয়া ইউনিয়নগুলো হলো-বেরাইদ, বাড্ডা, ভাটারা, সাঁতারকুল, হরিরামপুর, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও ডুমনি ইউনিয়ন। এ নিয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৯টি। নতুন ওয়ার্ডসহ ঢাকার দুই সিটির আয়তন ১২৯ বর্গকিলোমিটার থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ২৭০ বর্গকিলোমিটারে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সিভিল সার্কেল) কাজী মো. বোরহান উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ডিএসসিসিতে যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোর উন্নয়ন কাজে বিস্তর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে ওই এলাকার মানুষের যাতায়াত এবং ড্রেনেজ সুবিধা নিশ্চিত করতে দুটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এর মধ্যে শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল এবং সারুলিয়ার সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প আমার তত্ত্বাবধানে চলমান রয়েছে। প্রকল্প কাজের ৭৫ শতাংশ প্রায় শেষ হয়েছে। আগামী জুনে এই প্রকল্প শেষ হবে। তিনি আরও বলেন, ডেমরা, মান্ডা, নাসিরাবাদ ও দক্ষিণগাঁও এলাকার সড়ক ড্রেন উন্নয়নে আরেকটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পের আওতায় সড়কবাতিও লাগানো হচ্ছে। প্রকল্পের বাস্তবায়নে এসব এলাকায় উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোতে কিছু উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। তবে সার্বিক উন্নয়নের জন্য মাস্টারপ্ল্যান ও স্বল্পমেয়াদি ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) নামে একটি সংস্থাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা পুরো এলাকা সরেজমিন পর্যালোচনা করে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে ডিএসসিসির কাছে হস্তান্তর করবে। এতে কোথায় আঞ্চলিক কার্যালয়, ওয়ার্ড কার্যালয়, কমিউনিটি সেন্টার, হাসপাতাল, খেলার মাঠ, পার্ক, বর্জ্য শোধনাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ থাকবে। এ বছরের মধ্যে এই মাস্টারপ্ল্যান সম্পন্ন করে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি। 

ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ডিএনসিসিতে যুক্ত হওয়া আটটি ইউনিয়ন ভেঙে ১৮টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বাড্ডা ইউনিয়নকে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, ভাটারাকে ৩৯ ও ৪০, সাঁতারকুলকে ৪১,  বেরাইদকে ৪২, ডুমনিকে ৪৩, উত্তরখানকে ৪৪, ৪৫ ও ৪৬, দক্ষিণখানকে ৪৭, ৪৮, ৪৯ ও ৫০ এবং হরিরামপুরকে ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কাজের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. জামাল মোস্তফা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এই সিটিতে যুক্ত হওয়া এলাকাগুলো জরিপ করে উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ৩২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প প্রি-একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পেলেই রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ, পার্ক, খেলার মাঠসহ যাবতীয় উন্নয়ন কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর