বুধবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ট্রান্স এশিয়ান রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে চায় বাংলাদেশ

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

ট্রান্স এশিয়ান রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে চায় বাংলাদেশ

বাংলা ভাগের সময় এবং আরও পরে বন্ধ হয়ে যাওয়া সীমান্তমুখী গুরুত্বপূর্ণ রেলপথগুলো চালুর উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে উত্তরাঞ্চলের তিনটি স্থলবন্দরের সঙ্গে রেলযোগাযোগ স্থাপনের। পাশাপাশি এগিয়ে চলেছে সবগুলো জেলাকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনতে রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ। ইতিমধ্যে প্রকল্পগুলো আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের মধ্যেই ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে ট্রেন চলাচল শুরু করা সম্ভব বাংলাদেশের পক্ষে। সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের কাজ শেষ হলে সেই কানেকটিভিটি গড়ে উঠবে। দিনাজপুরের চিলাহাটি স্টেশন থেকে চিলাহাটি সীমান্ত পর্যন্ত রেলপথটি ১৯৬৫ সালে বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে এখনো বন্ধ। সম্প্রতি ৭ কিলোমিটার এই রেলপথ পুনর্বাসন ও ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আফজাল হোসেন জানান, এই রেলপথটি দিয়ে ভারতের সঙ্গে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ছিল। এখন সেটি পুনঃস্থাপনে প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সাম্প্রতিক তিন প্রকল্পে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সীমান্ত যোগাযোগকে। পাশাপাশি দেশের তিনটি স্থলবন্দরকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসার জন্য চলছে চারটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই। এসব প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়েতে বাংলাদেশকে কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করা। পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম জানান, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রেলের যে ভৌগোলিক অবস্থান আছে সেটিতে পরিবর্তন আসবে। শুধু বিভাগ নয়, প্রতিটি জেলার সঙ্গে সংযোগ গড়ে উঠবে রেলের। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের এই শীর্ষ কর্মকর্তা মনে করেন, ২০২২ সালের মধ্যে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে পুরোপুরি সম্পৃক্ত হওয়া সম্ভব বাংলাদেশের। এরপর আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন ও রেলপথে পণ্য পরিবহনের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

তিনি বলেন, ভারতে যেগুলো ট্রান্স এশিয়ানের জন্য স্বীকৃত লাইন, সেগুলোর সঙ্গে সংযোগ করেছে পশ্চিমাঞ্চল রেল। পূর্বাঞ্চলে মিয়ানমার আর পশ্চিমাঞ্চলে ভারতের সঙ্গে সংযোগ হবে। ফলে আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্বপ্ন দেখছে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার। আন্তর্জাতিক রেলযোগাযোগের পুরো সুবিধা যাতে সবাই পায়, সে লক্ষ্যে সব জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় নেওয়ার পরিকল্পনা পশ্চিমা রেলের। রেলওয়ে সূত্র জানায়, চিলাহাটি থেকে চিলাহাটি সীমান্ত ব্রডগেজ, পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া ডুয়েলগেজ ও খুলনা থেকে দর্শনা ডাবল লাইন রেলপথ সংযোগ প্রকল্পের কাজ চলছে।

এ ছাড়া সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সোনামসজিদ রেলপথ, পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা রেলপথ, ডোমার-জলঢাকা-ভোটমারি রেলপথ ও তিস্তায় দ্বিতীয় রেলসেতু। শত বছর পেরিয়ে যাওয়া হার্ডিঞ্জ সেতুর সমান্তরালে একটি নতুন রেলসেতু নির্মাণের তাগিদ আছে রেলপথটিকে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের উপযোগী করতে। তার আগ পর্যন্ত সেতুটির শক্তিবৃদ্ধিমূলক রক্ষণাবেক্ষণ কৌশলেই ভরসা রাখতে হবে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আফজাল হোসেন জানান, উজানে (আপস্টিমে) আরেকটি সমান্তরাল সেতু করা হচ্ছে। যেখানে থাকবে দুটি লাইন।

সর্বশেষ খবর