জেলা পুলিশ প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে ঐতিহ্যবাহী অষ্টমী স্নান শুরু হয়েছে। উৎসবকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরা পাপমুক্তির বাসনায় তিথি অনুযায়ী গতকাল সকাল ১১টা ৫ মিনিটে লগ্ন শুরুর পর থেকে স্নান শুরু করে। যা চলবে আজ সকাল ৮টা ৫৫ মিনিট ২২ সেকেন্ড পর্যন্ত। এ বিষয়ে পুণ্যার্থীরা জানান, গত যে কোনো বছরের তুলনায় এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল চোখের পড়ার মতো।
পুণ্যার্থীদের কোনো সমস্যা থাকলে জানাতে তাগিদ দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। তাদের এই তৎপরতা আগে কখনো দেখা যায়নি। দুপুরে পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ লাঙ্গলবন্দ স্নান সরেজমিন পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি পূণ্যার্থীদের স্নান উৎসবে কোনো প্রকার সমস্যা হচ্ছে কিনা তা তদারকি করেন।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ১৬শ পুলিশ সদস্য তিন শিফটে কাজ করছে। পুলিশের কাজ হলো পুণ্যার্থীরা যেন সুষ্ঠু সুন্দরভাবে স্নান সম্পন্ন করতে পারে, সে ব্যবস্থা করা।সনাতন হিন্দু পুণ্যার্থীরা পবিত্র নদ ব্রহ্মপুত্রে স্নানমন্ত্র পাঠপূর্বক নিজ নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী ফুল, বেলপাতা, ধান, দুর্বা, হরীতকী, ডাব, আম্রপল্লব ইত্যাদি দিয়ে পিতৃকূলের উদ্দেশ্যে তর্পণ করে। স্নান শুরুর পরে আশপাশের মন্দিরগুলোতে সাধু সন্ন্যাসীরা সমবেত হয়ে ভক্তিমূলক গান, বাজনা শুরু করে। এবার বৃষ্টি ও আকাশে মেঘ থাকায় পুণ্যার্থীদের ভিড় ছিল কম। আজ ভক্তদের আগমন বাড়বে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
স্নান উপলক্ষে ব্রহ্মপুত্র নদে বাঁশ দিয়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। নদে বিআইডব্লিউটিএর উদ্যোগে নিরাপত্তা ও পানির গভীরতার মাপ দিয়ে সংকেত দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, পুলিশের নিরাপত্তা ছিল কঠোর। স্নান উপলক্ষে লাঙ্গলবন্দের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসেছে মেলা। নিরাপত্তার জন্য ঘাটের পাশের সড়কে যানচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ হিন্দু কল্যাণ সংস্থার কেন্দ্রীয় সদস্য রনজিৎ মোদক জানান, এবার ললিত সাধুর ঘাট, অন্নপূর্ণ ঘাট, রাজ ঘাট, কালীগঞ্জ ঘাট, মা কুঁড়ি সাধুর ঘাট, মহাত্মা গান্ধী ঘাট, বড়দেশ্বরী ঘাট, জয়কালি ঘাট, রক্ষাকালী ঘাট, প্রেমতলা ঘাট, চর শ্রীরাম ঘাট, সাবদি ঘাট, বাসনকালী ও জসৎবন্ধু ঘাটে স্নান করা হচ্ছে।
লাঙ্গলবন্ধ স্নান উৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার সাহা বলেন, দুই দিনে ¯œানের তিথি হওয়ায় পুণ্যার্থীদের ভিড় কম। তিথি শুরু থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ¯œান করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ ভারত ও নেপাল থেকে পুণ্যার্থীরা এসেছেন।