খুলনায় স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ইন্টারনেটে অশ্লীল ছবি ছড়ানোর হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করেছে বখাটেরা। পাশাপাশি সৎ বাবার লালসার শিকার হয়েছে অষ্টম শ্রেনি পড়ুয়া আরেক স্কুলছাত্রী। নারী দিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছেন পুলিশ কর্মকর্তাও। অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, খুলনায় সামাজিক অপরাধ ও অবক্ষয়ের নির্মমতা ক্রমে বাড়ছে। প্রতিমাসে গড়ে ২০টির বেশি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। যার মধ্যে শিশু হত্যা, ধর্ষণ ও পাচারের ঘটনা রয়েছে। এসব অপরাধের পেছনে সামাজিক অস্থিরতা, পেশাগত মূল্যবোধের অভাব, স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবেশ বড় কারণ বলে মনে করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ খান। তিনি বলেন, পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতি, যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার ও হতাশা বোধ সামাজিক মূল্যবোধকে ভেঙে দিয়েছে। জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল রাতে খুলনার নিরালা প্রান্তিকা আবাসিক এলাকায় একটি বাড়িতে নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে এক যুবককে আটকে রেখে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশের দুই সহকারী উপ-পরিদর্শক সদর থানার মো. সিফাত উল্লাহ ও সোনাডাঙ্গা থানার মিরান উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। এদিকে গত ৮ এপ্রিল কোচিংয়ে যাওয়ার পথে অপহৃত হয় নগরীর সোনাডাঙ্গা কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্রী তাসমিম। ১৬ এপ্রিল থেকে মেয়েটির অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তার পরিবারের কাছে মোবাইলে চাঁদা দাবি করছে বখাটেরা। আর গতকাল নগরীর খালিশপুরে অষ্টম শ্রেনি পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মেয়েটির সৎ পিতা মিজানুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, মামলার দীর্ঘসূত্রতায় অপরাধ করার পরও শাস্তি না হওয়ায় অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। মনিটরিং না থাকায় নানা অপরাধের মধ্যে জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ সদস্যরাও।