বুধবার, ২২ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

অনিশ্চয়তায় কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধে হচ্ছে একটির পর একটি মামলা। মামলার কারণে উচ্ছেদে তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। ক্রমেই দীর্ঘতর হচ্ছে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। বিস্তার হচ্ছে আইনি ডালপালা। উচ্ছেদ কার্যক্রম বিলম্ব হওয়ায় ফাঁকে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন স্থাপনা। এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে ১ হাজার ৯৫৯টি স্থাপনা। ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে কর্ণফুলীর বুক। জনমনে বাড়ছে শঙ্কা। প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে প্রশাসনের ভূমিকা। জানা যায়, ৯ এপ্রিল হাই কোর্ট কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান দ্রুত পরিচালনা করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করে এক মাসের মধ্যে এ-সংক্রান্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। এক সম্পূরক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। অন্যদিকে ১৫ এপ্রিল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগের বেঞ্চ কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের করা আপিল খারিজ করে দেন। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান ১৬ এপ্রিল চট্টগ্রামের তৃতীয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করে সংশ্লিষ্ট স্থাপনা উচ্ছেদ কিংবা ভাঙার বিরুদ্ধে              অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে। একই সঙ্গে কর্ণফুলী কোল্ড স্টোরেজের পাঁচতলা ভবন উচ্ছেদেও নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। এ মামলায় বিবাদী করা হয় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদরকে। ২৫ এপ্রিল নিম্ন আদালত (তৃতীয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) উচ্ছেদে স্থিতাবস্থা দেন। এভাবে আইনি মারপ্যাঁচে পড়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ।

সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী চট্টগ্রামের জিপি অ্যাডভোকেট নাজমুল আহসান খান বলেন, অভিন্ন বিষয়, অভিন্ন শিডিউলের ভূমি নিয়ে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের করা আপিল আবেদন খারিজ করে দেওয়া-সংক্রান্ত আপিল বিভাগের আদেশসহ বিভিন্ন কাগজপত্র আমরা আদালতের সামনে উপস্থাপন করেছি। এ নিয়ে বিস্তারিত শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়। পরে তৃতীয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত কর্ণফুলী শিপ বির্ল্ডাসের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন। পরবর্তী আদেশ আসা পর্যন্ত এ অবস্থা বজায় থাকবে বলে আদালত থেকে জানানো হয়।’

কর্ণফুলী শিপ বির্ল্ডাসের আইনজীবী অ্যাডভোকেট পরিমল চন্দ্র বসাক বলেন, ‘কর্ণফুলী শিপ বির্ল্ডাসের স্থাপনা উচ্ছেদে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত ২৫ এপ্রিল বিস্তারিত শুনানি শেষে উভয় পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন।’ জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘নদী দখল-দূষণের পরিস্থিতি চরম নাজুক। কিন্তু যে কোনো মূল্যে নদীকে বাঁচাতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর