চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার বগার বিল এলাকার জাফর আলমের খেদোক্তি, ‘ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বাসা থেকে কেবল পানিই সেচ করছি। দীর্ঘ সময় পানি সেচ করেও কোনো কিনারা করতে পারিনি। এরই মধ্যে বাসার প্রয়োজনীয় অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। গত ছয় বছর ধরেই বর্ষা মৌসুমে এমন কষ্ট ভোগ করে আসছি। এটি আমাদের জন্য বড় অভিশাপ।’ চট্টগ্রাম নগর এখন চরম দুর্ভোগ, কষ্ট ও অন্তহীন ভোগান্তির শহর। টানা বর্ষণে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। বিপর্যস্ত নাগরিক জীবন। ঘরে বাইরে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মুখে মানুষ। বাসায় বাস করতে হচ্ছে কাদা ও কাদাপানিতে। বাইরে সড়কগুলো ক্ষতবিক্ষত। সংকট যানবাহনেরও। জলাবদ্ধতায় অনেক নালার ময়লা-আবর্জনা সড়কে স্তূপ হয়ে আছে। ময়লায় ভরাট হয়েছে নালা-নর্দমা। ফলে ভোগান্তি অতিমাত্রা ধারণ করেছে। ৪ জুলাই শুরু হওয়া অতিবর্ষণের কারণে নগরের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি না থাকলেও বিকালে ফের শুরু। বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় অধিকাংশ ওয়ার্ড। ফলে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে দিনাতিপাত করতে হয় জলাবদ্ধতা সঙ্গে নিয়েই। এদিকে কিছু এলাকা থেকে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে হাঁ করে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন সড়কের ক্ষতগুলো। নগরের চকবাজার কাঁচাবাজার মোড়, বহদ্দারহাট, বিবিরহাট রোড, ২ নম্বর গেট থেকে মুরাদপুর, কেবি আমান আলী রোড, রাহাত্তারপুল সড়ক, নতুন ব্রিজ গোলচত্বর, শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক, আরাকান সড়ক, বাকলিয়া ডিসি রোড, নিউমার্কেট থেকে টাইগার পাস রোড, বহদ্দারহাট থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা সড়কের অবস্থা বেহাল। অতিবর্ষণে সড়কগুলোয় তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। সঙ্গে যোগ হয়েছে সেবা সংস্থার অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি। ফলে সড়ক অতীতের চেয়ে বেশি মাত্রায় ক্ষতি হয়েছে। ছোট-বড় অসংখ্য গর্তে সড়কগুলো এখন বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে বলে জানা যায়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে নগরের অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক নির্দিষ্টকরণে কাজ চলছে। চূড়ান্ত তথ্য সংগ্রহের পর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’