যানজট নিরসন ও জনদুর্ভোগ কমাতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) দুই শিফটে পৃথকভাবে লাল-সবুজ অটোরিকশা চলাচল শুরু করাতে চেয়েছিল। একইসঙ্গে অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা মালিক এবং চালকদের দেওয়া শুরু হয়েছিল স্মার্ট কার্ড। চালকদের জন্য নির্ধারিত পোশাক। এ জন্য জুলাই মাস পর্যন্ত সময় নিয়েছিলেন মালিক-চালকরা। কিন্তু জুলাই মাস শেষ হলেও দুই শিফটেই চলছে লাল-সবুজ অটোরিকশা। দীর্ঘদিন ধরে যানজট নিয়ে ভোগান্তির মধ্যে ছিলেন নগরবাসী। এই ভোগান্তি থেকে রেহাই দিতে নগরীতে দুই রঙয়ে সকাল ও বিকাল দুই শিফটে অটোরিকশা চলাচল কার্যক্রম শুরু করা হয় গত জুনে। ১ জুলাই থেকে পুরোপুরি এই সিদ্ধান্ত কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছিল রাসিক। পরে মালিক-চালকদের অনুরোধে সময় বাড়িয়ে পুরো জুলাই মাস দেওয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা সুষ্ঠুভাবে চলাচলের জন্য রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছিল। নীতিমালা অনুযায়ী মাসের প্রথম ও তৃতীয় সপ্তাহে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২.৩০টা পর্যন্ত মেরুন রঙের অটোরিকশা এবং দুপুর ২.৩০টা থেকে রাত ১০.৩০টা পর্যন্ত গাঢ় সবুজ রঙের অটোরিকশা চলাচল করবে। মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২.৩০টা পর্যন্ত গাঢ় সবুজ রঙের এবং দুপুর ২টা হতে রাত ১০.৩০ পর্যন্ত মেরুন রঙের অটোরিকশা চলাচল করবে।
তবে শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিনে সারাদিন এবং প্রতিদিন রাত সাড়ে ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত উভয় রঙের অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে।
নীতিমালা অনুযায়ী ১০ হাজার অটোরিকশা এবং ৫ হাজার চার্জার রিকশার নিবন্ধন দেবে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। অটোরিকশা দুই শিফটে চললেও চার্জার রিকশার ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। তবে চিকন চাকার চার্জার রিকশার চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব সিদ্ধান্তের কিছুই কার্যকর হয়নি। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা যানবাহন হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ। সিটি করপোরেশেনের পক্ষ থেকে এগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও পরবর্তীতে সেই সিদ্ধান্ত এখন শিথিল করা হয়েছে। তবে দ্রুতই দুই শিফটে দুই রঙের অটোরিকশা চলাচলে আমরা কঠোর অবস্থানে যাব।’তিনি আরও জানান, গত ১ জুলাই থেকে নগরীতে দুই শিফটে কলাপাতা ও পিত্তি রঙের (গাঢ় সবুজ) অটোরিকশা চালু করার কথা ছিল। ওইদিন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ঘটা করে দুই শিফটের অটোরিকশা উদ্বোধনও করেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র দুই হাজার ৯০০টি আবেদন জমা পড়েছে নিবন্ধনের জন্য। এর মধ্যে চালক ও অটোরিকশার জন্য দুটি আলাদা ক্যাটাগরি আছে। দুই ক্যাটাগরি মিলে এই আবেদন জমা পড়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘দ্রুতই নগরীর অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে দুই শিফটে (সকাল-দুপুর) অটোরিকশা চালু কার্যক্রম করা হবে। এর জন্য প্রক্রিয়া চলছে। চালক ও অটোরিকশার নিবন্ধনও এগিয়ে চলছে। যারা এর আওতায় আসবে না প্রয়োজনে তাদের সেসব অটোরিকশা চলতে দেওয়া হবে না।’