ঈদের দিন সকালে পশু কোরবানি এরপর নিয়ম অনুযায়ী মাংস বিতরণ শেষে বিকালে দম ফেলার ফুরসত মেলবে নগরবাসীর। ঈদের লম্বা ছুটিতে আত্মীয়স্বজনের বাসায় দাওয়াত খাওয়ার পাশাপাশি ঢাকাবাসী ঘুরে বেড়াবেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। ঢাকার বিনোদন কেন্দ্রগুলো ঈদের ছুটিতে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী বরণে এবারও খোলা থাকছে। এরই মধ্যে ঈদ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিশু পার্ক, চিড়িয়াখানা, জাতীয় উদ্যান, সিনেমা হল, ঐতিহাসিক নিদর্শন ও জাদুঘর ঈদে বিশেষ সুবিধা নিয়ে মানুষের বিনোদন জোগাবে। ঈদের ছুটিতে ঢাকার মিরপুর চিড়িয়াখানায় প্রতিবারই বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর উপস্থিতি দেখা যায়। এই ঈদেও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না বলে আশাবাদি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। ছোট-বড় সব শ্রেণি-পেশার মানুষই চিড়িয়াখানায় ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন। চিড়িয়াখানার কিউরেটর এস এম নজরুল ইসলাম জানান, সাধারণ সময়ের তুলনায় ঈদের ছুটিতে চিড়িয়াখানায় দর্শক উপস্থিতি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আর বিপুল দর্শনার্থীর চাপ সামলাতে সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ছুটিতে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এই বিনোদন কেন্দ্রটি। রাজধানী শ্যামলীতে অবস্থিত উত্তর সিটি করপোরেশন পরিচালিত শিশুপার্ক-শিশুমেলা এই ঈদেও শিশু-কিশোর ও তাদের অভিভাবকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে। এখানকার ৪০টি রাইডের মধ্যে কিছু রাইড শিশুদের সঙ্গে আসা অভিভাবকরাও উপভোগ করতে পারবেন। ঈদের এক সপ্তাহে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শিশুমেলা খোলা রাখা হবে। বেসরকারি পার্কগুলোর মধ্যে ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় অবস্থিত থিমপার্ক ফ্যান্টাসি কিংডমে প্রতিবারই ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকা থেকে বিপুল দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। পার্ক কর্তৃপক্ষ জানান, ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পার্কটি খোলা থাকবে। একই সঙ্গে জনপ্রিয় আরেকটি থিমপার্ক নন্দনও ছুটিতে ওয়াটার ওয়ার্ল্ডসহ আকর্ষণীয় রাইড দিয়ে দর্শকদের বরণ করতে প্রস্তুত।
ছুটিতে খোলা থাকবে জাতীয় জাদুঘরও। দর্শকদের জন্য জাদুঘরে আছে ৯০ হাজারের ওপর নিদর্শন। ঈদে জাদুঘরে মোট ৪৫টি গ্যালারির সব কটিই খোলা থাকবে। দর্শকরা ঈদের ছুটিতে পরিবর্তিত সময়ে অর্থাৎ বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাদুঘর ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানান, ঈদের দিন ও তার পরের দিন মঙ্গলবার জাদুঘর খোলা থাকবে। এই ঈদে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানান, ঈদে শিশু কিশোর ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিনা টিকিটে জাদুঘর পরিদর্শনের সুযোগ পাবে। এ ছাড়া মুঘল স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন ঢাকার লালবাগ কেল্লাতেও ঈদের ছুটিতে বিভিন্ন বয়সী মানুষ ভিড় করবেন। এ সময় হাজারো দর্শনার্থীর ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠবে লালবাগ কেল্লা। অতিরিক্ত দর্শক সমাগমের কথা বিবেচনা করে এরই মধ্যে লালবাগ কেল্লার দেখভালে দায়িত্বপ্রাপ্তরা সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন। পুরান ঢাকার সদরঘাটে অবস্থিত নওয়াবী আমলের আরেক নিদর্শন আহসান মঞ্জিলেও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর বাইরে ঈদের ছুটিতে বিনোদনপ্রেমীরা ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের অন্যতম আকর্ষণবিন্দু স্টার সিনেপ্লেক্স-এ যাবেন। ঈদ উপলক্ষে সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বাংলা ও ইংরেজি নতুন বেশ কয়েকটি সিনেমা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেছে।