শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
রাজশাহীর রাজনীতি

নীরবে কাটছে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রহিম (৬৭)। আওয়ামী লীগের শুরু থেকে আছেন রাজনীতির সঙ্গে। নানা প্রলোভনেও দল বদল করেননি। এখন তার জীবন চলছে ওষুধের দোকানে বসে বসে। সেখান থেকে যে আয়, তা দিয়েই চালান সংসার। বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাস আলী শাহ (৭৪)। এক সময় রাজনীতির মাঠের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতিতে আছেন। কিন্তু দলীয় কর্মসূচিতে আর আগের মতো ডাকা হয় না। তাই বাড়িতে বসেই সময় কাটান। রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাদের অনেকে এখন নিভৃতে জীবনযাপন করছেন। কেউ কেউ সরকারি নানা সুবিধা পেয়ে নিজের জীবন বদলে ফেললেও তৃণমূলের বহু নেতা এখনো বঞ্চিত। সরকার ক্ষমতায় আছে, সে টুকুই জানেন তারা। কিন্তু সরকারি সুবিধা নিয়ে যারা এখন রাজনীতির মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, তারা খোঁজ রাখেন না এই প্রবীণ নেতাদের। জেলা আওয়ামী লীগ সম্প্রতি আজন্ম যোদ্ধা দলের প্রবীণ নেতাদের সম্মাননা জানিয়েছে। সেখানে আসা এই প্রবীণ নেতারা ক্ষোভ করেন। তাদের অভিযোগ, দলের দুঃসময়ে তারা রাজপথে ছিলেন। এখন তাদের আর ডাকা হয় না। বয়স হলেও আদর্শচ্যুতি ঘটেনি জানিয়ে, একাধিক নেতা বলেন, ‘আমাদের রক্তে ঘামে যারা এখন নেতা, তারা খোঁজ রাখে না।’ বাঘার আক্কাস আলী শাহ বলেন, ‘বাড়িতে বসেই সময় কাটাই। কেউ আর ডাকে না, খোঁজও রাখে না। কাকে কী বলব। এত বছর দল ক্ষমতায় কোনো নেতা আমাদের খোঁজই নেয়নি।’ চারঘাট উপজেলার আনিসুর রহমান বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের সময় আমি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। তখন কেউ বঙ্গবন্ধুর নামই নিতে পারত না। সে সময়ও দল ছেড়ে যায়নি। কিন্তু এখন যারা ক্ষমতায়, তারা আমাদের মতো কর্মীদের খোঁজই রাখে না। টানা ১১ বছর দল ক্ষমতায়, তারপরেও উপেক্ষিত তৃণমূলের প্রবীণ নেতারা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, প্রবীণ এসব নেতাদের কথা ভেবেই তাদের সম্মানিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দলে এই নেতাদের অবদান কখনই অস্বীকার করার মতো নয়। এতদিন তারা তা করতে পারেননি। তবে প্রবীণ অসচ্ছল নেতাদের একটি তালিকা তারা তৈরি করছেন। তাদের সম্মাননা জানানো এবং পারলে সহায়তার উদ্যোগ নিচ্ছেন তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর